প্রত্নতাত্ত্বিক সহযোগিতা চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব অব্যাহত রেখেছে
নটেশ্বর সাইটের ঐতিহ্যের প্রথম পর্যায় হলো একটি মহায়ানা বৌদ্ধ মন্দির (Mahayana Buddhist temple)। মন্দিরের প্রান্তে অবস্থিত এবং বেশ কয়েকটি সন্ন্যাসীর ঘর ও বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হওয়ার ক্যান্টিন ভবন, বাথরুম ও ড্রেন। ভবনগুলি অষ্টম থেকে দশম শতাব্দীর দিকে নির্মিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় পর্যায়ের সাইট একটি ‘ক্রস-আকৃতির কেন্দ্রীয় মন্দির’, যা ‘দাতুরা’ স্থাপত্য (Datura architecture) নামেও পরিচিত। এটি খ্রিস্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে তৈরি হয়েছিল। এই বৃহত্ আকারের ভিন্ন ফংশনসহ বৌদ্ধমন্দির সাহিত্যে রাজধানী শহরের সঙ্গে মেলে, একটি রহস্যময় প্রাচীন শহর যা দীর্ঘকাল ধরে সমাহিত হয়ে রয়েছে।
নটেশ্বর সাইটে সংরক্ষিত দু’টি যুগের স্থাপত্যের ঐতিহ্য দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত বৌদ্ধ স্থাপত্যের পরিবর্তন সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য দেয়। সাইটে প্রচুর পরিমাণ মাটির বাসন আবিষ্কার করা হয়েছে। এতে একটি প্রাথমিক মাটির বাসন শিল্পের যুগের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠিত করেছে, যা বাংলাদেশের এক্ষেত্রে শূন্যতা পূরণ করে। এ ছাড়াও এতে প্রচুর চীনা চীনামাটির টুকরা পাওয়া গেছে, এর মধ্যে রয়েছে থাং রাজবংশ থেকে ছিং রাজবংশের সাদা চীনামাটির বাসন, নীল-সাদা চীনামাটির বাসন এবং অন্যান্য ধরণ, যা চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘ ইতিহাসে ঘনিষ্ঠ বিনিময়কে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।
এই প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার বাংলাদেশে অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং ২০টিরও বেশি মিডিয়া প্রত্নতাত্ত্বিক খনন নিয়ে প্রতিবেদন করেছে। নতুন সংস্করণের ‘বাংলাদেশের ইতিহাস’-এ চীন-বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক দলের লিখিত ‘বিহারপুর’ অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত রয়ছে, যা মানবিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের অত্যাধুনিক ফলাফল হয়ে উঠেছে। চীনা ভাষা ও ইংরেজি প্রত্নতাত্ত্বিক প্রতিবেদন ‘নটেশ্বর’ বইটি দু’দেশে একইসাথে প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রকল্প চীনের সামাজিক ও বিজ্ঞান একাডেমির ২০১৯ সালের বিদেশি প্রত্নতাত্ত্বিকদের নতুন আবিষ্কার পুরস্কারও জয় করেছে।