প্রত্নতাত্ত্বিক সহযোগিতা চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব অব্যাহত রেখেছে
‘বাংলাদেশের ইতিহাসের’ নতুন অধ্যায়ে ঐতিহাসিক প্রাচীন রাজধানী বিহারপুর, বর্তমান মুন্সিগঞ্জ জেলার পরিচিতিমূলক একটি অধ্যায় রয়েছে; যেখানে চীন-বাংলাদেশ যৌথ প্রত্নতাত্ত্বিকঅনুসন্ধান ও গবেষণা কাজ করেছে। বিহারপুর বাংলাদেশের বিশিষ্ট বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এবং চীন-বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের অগ্রদূত অতীশ দিপঙ্করের জন্মস্থান। চীন ও বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিকদের যৌথ প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে অতীশ দিপঙ্করের জীবনের ঐতিহাসিক স্থান।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ বরাবর একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। যা প্রাচীন ‘দক্ষিণ রেশমপথের’ অবিচ্ছেদ্য অংশ। চীন ও বাংলাদেশের বিনিময়ের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। পূর্ব চিন রাজবংশের ফাসিয়ান, থাং রাজবংশের পরিব্রাজক হিউয়েন সাং এবং অন্যান্য বিশিষ্ট সন্ন্যাসীরা বাংলাদেশে সফর করেছেন।
মিং রাজবংশের পর দু’দেশের মধ্যে বিনিময় আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। চীনের বৈদেশিক বিনিময়ের লিখিত রেকর্ডে প্রায়শই উল্লেখিত ‘Bangala’ এবং ‘Bangela’ বর্তমান বাংলাদেশকে নির্দেশ করে। মিং রাজবংশের সরকার বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একটি আনুষ্ঠানিক কারখানাও স্থাপন করেছিল, যা চেং হ্য-এর নৌবহরের ঘাঁটিতে পরিণত হয়।
প্রাচীন শহর বিহারপুর রাজধানী ঢাকার প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে মুন্সিগঞ্জ জেলায় অবস্থিত, গঙ্গা ও যমুনা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত। এটি চান্দলা (Candala), বর্মণ (Varman) এবং সিনার (Sena) তিনটি রাজবংশের রাজধানী এবং একইসঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মগুরু আতীশ দীপঙ্করের জন্মস্থান।
১০৪০ সালে ৫৯ বছর বয়সে অতিশা (অতীশ দীপঙ্কর) তুষার-ঢাকা পাহাড়ের উপর আরোহণ করেছিলেন, তাকে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের জন্য তিব্বতে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং তার মৃত্যুর পর লাসার কাছে নিয়েথাং মন্দিরে সমাহিত করা হয়। ১৯৭৮ সালে অতীশ দিপঙ্করের দেহাবশেষ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তা এখন ঢাকার ধর্মরাজিকা বৌদ্ধমন্দিরে (Dharmarajika Buddhist Monastery) সংরক্ষণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী বিনিময় বছরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে, অতীশ দিপঙ্কর মেমোরিয়াল হল আনুষ্ঠানিকভাবে নটেশ্বর সাইটের কাছে সম্পন্ন করা হয়। অতীশ দিপঙ্করের গল্প চীন-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।