চীনে গ্রামাঞ্চলের বাচ্চাদের জন্য আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির চেষ্টা
২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে খুনমিং শহরে ৫ জন স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষকের সাথে প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেওয়া পর তারা টানা ১০ ঘন্টার বাস জার্নিশেষে শিতিয়ানে পৌঁছান। আসার পথে সবুজ পাহাড় এবং বনাঞ্চলের দৃশ্য তাদের ভালো লাগে। মনে আনন্দ নিয়ে তারা স্কুলে যায়। তবে স্কুলে যাওয়ার পর খেয়াল করে যে, সেখানকার বাচ্চাদের পড়াশোনার প্রতি তেমন একটা আগ্রহ নেই, শিক্ষকদের প্রশ্নেরও জবাবও তারা দিতে পারে না।
এ অবস্থার পরিবর্তনে স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষক নি বাচ্চাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরতে থাকেন। সাপ্তাহিক ছুটিতে তিনি পাহাড়ি রাস্তা ধরে হেঁটে হেঁটে একেকজন শিক্ষার্থীর বাড়ি যান ও তাদের অবস্থার খোঁজখবর নেন। একবার তিনি দেড় ঘন্টার পাহাড়ি রাস্তায় হেঁটে একজন ছাত্রীর বাসায় যান। তখন মেয়েটি নানীকে সাহায্য করছিল ঘরের কাজে। সেই সময় মেয়ের সাথে কথাবার্তা বলেন শিক্ষক ই। তাদের পরিবারের সমস্যা, পড়াশোনায় তার অমনোযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। তখন থেকে বাচ্চাদের অনুভূতির ওপর আরো বেশি গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেন শিক্ষক ই। পরে মেয়েটি আরও প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে এবং লেখাপড়ায় ভালো করতে শুরু করে।
জেলার ১৩টি উপজেলা সফর করেন শিক্ষক ই। তিনি খেয়াল করেন যে, পাহাড়াঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতার কারণ কেবল শিক্ষক বা শিক্ষাসরঞ্জামের অভাব নয়, বরং শিক্ষক ও বাচ্চাদের পিতামাতাদের আত্মবিশ্বাসের অভাবও বটে। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সি’আন চিয়াওথুং বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে শিতিয়ান প্রাথমিক স্কুলের ২৫টি ক্লাসের জন্য ৬৮৪টি বই যোগাড় করা হয়। আর প্রতিটি ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের ‘কলম বন্ধু’ নির্ধারণ করা হয়। এভাবে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করা শুরু করে এবং নিজেদের মনের কথা শেয়ার করার সুযোগ পায়। প্রতিদিন ক্লাসের আগে ছাত্রছাত্রীরা সহপাঠীদের সাথে নিজেদের স্বপ্ন তুলে ধরতে শুরু করে। ধীরে ধীরে গ্রামাঞ্চলের বাচ্চারা আগের চেয়ে অনেক বেশি কথা বলতে শেখে, অনেক রাত পর্যন্ত বইও পড়তে শেখে।