চীনের মহাকাশকেন্দ্র ও ‘থিয়ানকুং ক্লাস’ সমাচার
মহাশূন্য স্টেশনের মাইক্রোগ্রাভিটি পরিস্থিতিতে তরল পৃষ্ঠটানের কারণে অভিন্ন তরল বল দেখা দেয়, তাই তরলের টানশক্তি বোঝাতে শিক্ষক ওয়াং দ্বিতীয় পরীক্ষা করেন। তিনি হাত দিয়ে দুটি প্লাস্টিক বোর্ড ধরেন এবং নভোচারী ইয়ে কুয়াংফু পানির ব্যাগ দিয়ে প্লাস্টিক বোর্ডের ওপর আলাদাভাবে একটি তরল বল লাগিয়ে দেন। তখন পৃথিবীর ক্লাসরুমের ছাত্রছাত্রীরাও এ ধরনের পরীক্ষা করছিল। মহাশূন্যে শিক্ষক ওয়াংয়ের হাতের দুটি তরল যুক্ত হবার পর তিনি যখন ধীরে ধীরে দু’দিক থেকে টানতে থাকেন, তখন একটি বিশেষ আকারের লম্বা তরল সেতুর মতো সৃষ্টি হয়। পৃথিবীর ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের হাতের তরল এমন দৃশ্য সৃষ্টি করে না। এ সম্পর্কে থিয়ানকুং বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য, বেইজিং চিয়াওথং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ছেন চেং ব্যাখ্যা করে বলেন যে, তরল সেতু কেবল মাইক্রোগ্রাভিটির পরিস্থিতিতে সৃষ্টি করা যায়, পৃথিবীতে গ্রাভিটির প্রভাবে বিশেষ উচ্চচাপের পরিবেশে তরল সেতু দেখা যেতে পারে।
বিংতুনতুন ও থিয়ানকুং ক্লাস
এবারের ক্লাসে ভাসমান পরীক্ষাও চালান মহাকাশের শিক্ষকরা। শিক্ষক ওয়াং একটি বোতলে পানি ও তেল রাখেন। পৃথিবীর ক্লাসরুমের ছাত্রছাত্রীরাও বোতলে পানি ও তেল রেখে ঝাকা দেয়। দেখা গেল মহাশূন্যে তেল ও পানি একসাথে মিশ্রিত হয়েছে। তখন শিক্ষক ইয়ে মহাশূন্যে দ্রুত বোতল ঘুরাতে থাকেন। দেখা গেল পানি ও তেল আলাদা হয়ে গেছে।
নভোচারীরা এবারের মহাশূন্য-যাত্রায় একজন বিশেষ অতিথি নিয়ে গেছেন। এই অতিথি হলেন বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের মাস্কট বিংতুনতুন। ক্লাসে বিংতুনতুনও বিশেষ ভুমিকা পালন করেছে। শিক্ষক ওয়াং বিংতুনতুনকে একদিকে ধাক্কা দিয়েছেন, তখন শিক্ষক ইয়ে অন্যদিকে দাঁড়িয়ে বিংতুনতুনকে ধরে ফেলেন। তারপর আবার ওয়াংয়ের কাছে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফিরিয়ে দেন। এভাবে দেখা গেল বিংতুনতুন দু’জনের মধ্যে অভিন্ন রৈখিক গতিতে যাওয়া-আসা করছে। মহাশূন্য স্টেশনের মাইক্রোগ্রাভিটির কারণে এমনটা ঘটে। এ অবস্থায় কোনো পদার্থের ওপর গ্রাভিটি কাজ করে না।