২০২২ বেইজিং শীত্কালীন প্যারালিম্পিক গেমসের মাস্কট স্যুয়ে রং রংয়ের ডিজাইনারের গল্প
এ সম্পর্কে স্যুয়ে রং রং ডিজাইনদলের সদস্য, চিলিন শিল্পকলা একাডেমির ডিজাইন বিভাগের উপ-প্রধান উ ই বো বলেন, সেই সময় বসন্ত উত্সবের ছুটি চলছিল। তাই ছুটিতে যাওয়া ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের বাড়ি থেকে ডেকে আনতে হয়। মাস্কট সংশোধনী দলের নামও রাখা হয় ‘১২৫ দল’।
অলিম্পিক কমিটির মাস্কট ডিজাইন গোপনীয়তা রক্ষার জন্য ডিজাইনার দলের সদস্য মাত্র ১৭ জন। তারা দিন-রাত স্কুলের বিশেষ অফিসভবনে সংশোধনীর কাজ করে চলেন। বহু চিন্তাভাবনার পর খসড়া ডিজাইন আঁকা ও থ্রিডি ডিজাইনসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে ৩টি মাস্কট প্রস্তাব করা হয়।
১৮ দিন পর ডিজাইনার প্রতিনিধিদল ৩টি প্রস্তাব ও ৬২টি স্ক্যাচ নিয়ে বেইজিংয়ে পৌঁছান। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চীনা গিঁট ডিজাইন বাতিল করা হয়। এপ্রিল মাসে মাস্কটের মূল আকার লন্ঠন, পায়রা ও এলকের মধ্যে বহুবার পরিবর্তন ঘটানো হয়। মে মাসের শেষ দিকে অবশেষে লাল লন্ঠনের ডিজাইন বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে ডিজাইনার দল মোট ৩২টি প্রস্তাব দিয়েছে এবং তাতে স্ক্যাচের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ডিজাইনার দল গ্রাফিক ডিজাইন,পণ্যের নকশা, কার্টুন ডিজাইন ও থ্রিডি মডেলসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে মাস্কট তৈরি করেছে।
মডেলও তৈরি হয় ডিজাইনার দলের নিজের উদ্যোগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বর্গমিটারের স্টুডিওকে অস্থায়ী কারখানায় রূপান্তরিত করা হয়। ৩ বর্গমিটারের ব্যালকনি পেইন্টিং কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। এ অভিজ্ঞতা স্মরণ করে ডিজাইনাররা বলেন, তাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল লন্ঠন জ্বালানো এবং তাকে শীতকালীন প্যারালিম্পিক গেমসের সাথে যুক্ত করা।
এ সম্পর্কে চিলিন শিল্পকলা একাডেমির কার্টুন বিভাগের উপ-প্রধান চিয়াও ছিয়াং বলেন, ‘দীর্ঘকাল ধরে আমরা চেষ্টা করছি লন্ঠনের মধ্যে পশুপাখির ডিজাইন দিয়ে প্রাণ সঞ্চার করতে। এর অংশ হিসেবেই লন্ঠনের ওপর এলকের শিং বা পাখির ডানা যুক্ত করা হয়। তবে এমন ডিজাইনের মাস্কট দেখতে খুব একটা ভালো লাগেনি। পরে আমরা খেয়াল করি যে, এমন চিন্তাধারা সফল হবে না। ফলে আমরা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে লন্ঠনে পশুপাখির মূর্তি ব্যবহার করার চেষ্টা পরিত্যাগ করি। বরং লন্ঠনকে প্রাণচঞ্চল করার উপাদান যুক্ত করি। ২০১৯ সালের ২১ অগাস্ট আমাদের ডিজাইন প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর স্যুয়ে রং রং ২০২২ বেইজিং শীতকালীন প্যারালিম্পিক গেমসের মাস্কট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে লোকদের সামনে তুলে ধরা হয়। সেই সময় ডিজাইনার দলের সবাই আনন্দে কেঁদেছে। এ কাজের পিছনে কতো কষ্ট বা পরিশ্রম ছিল তা কেবল তারাই জানেন।’