উত্তর মেরুর রাতের প্রহরী লি বিন
এসময় লি বিন কীভাবে দিন কাটান? সকালে ঘুম থেকে জাগার পর তিনি প্রথমে চীনে তার সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ নিয়ে কথা বলেন। তারপর অফিস শেষ হবার পর পরিবারের সঙ্গে ভিডিওর মাধ্যমে কথা বলেন। সন্ধ্যা ৬টার পর তার ব্যস্ততম সময় শুরু হয়। তিনি নতুন অ্যালেসুন্ড, স্পিটসবার্গেন দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী ও আইসল্যান্ডের কেলহে তিনটি জায়গার তিনটি আরোরা পর্যবেক্ষণ স্থাপনা পরিচালনা করেন। এসব পর্যবেক্ষণ ডেটা চীনের দক্ষিণ ও উত্তর মেরু ডেটা কেন্দ্রের ওয়াবসাইটে আপলোড করা হয় এবং সব আরোরা পর্যবেক্ষক ও অনুরাগী ওয়েবসাইটে ডেটা দেখতে ও ডাউনলোড করতে পারেন।
যেদিন তীব্র আরোরা হয় লি বিন ক্যামারা নিয়ে বাইরে গিয়ে ছবি তোলেন। যদি তুষারপাত হয়, তবে তিনি মাইনাস ২০-৩০ ডিগ্রির শীতে হুয়াং হ্য স্টেশনের সব কেবল ও স্থাপনার নিরাপত্তা চেক করেন।
নতুন অ্যালেসুন্ডে একটি ক্যান্টিন আছে। সেখানে তিন বেলা নানা দেশের গবেষকদের জন্য খাবার সরবরাহ করা হয়। রাতে কাজ করার কারণে লি বিন সাধারণত সেখানে নাস্তা খেতে পারেন না। দুপুর ১২টার দিকে, তিনি সেখানে গিয়ে খাবার খান। গভীর রাতে তিনি শুধু ইনস্ট্যান্ট নুডলস ও টিনজাত খাবার খান।
আসলে বিশ্বের অনেক জায়গায় মেরুপ্রভা পর্যবেক্ষণ করা যায়, তবে নতুন অ্যালেসুন্ডে রয়েছে বিশেষ সুবিধা। উচ্চ অক্ষাংশের কারণে এখানে শীতকালে দিন বা রাতের যে কোনও সময়ে আরোরা দেখা যায়। বিশেষ করে দুপুর ১২টার দিকে এখানে যে আরোরা দেখা যায় তা গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
হুয়াং হ্য স্টেশন চীনের সবচেয়ে দূরবর্তী অক্ষাংশের একটি মেরু গবেষণাকেন্দ্র তবে উত্তর আটলান্টিক স্রোতের কারণে এখানে শীতকালে দক্ষিণ মেরুর মতো এতো শীত লাগে না। লি বিন বলেন, যদিও এখানে মাঝে মাঝে তুষারপাত হয়, তবে গড় তাপমাত্রা মাইনাস ১৫ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকে। যদি বাতাস থাকে, তাহলে অতো শীত লাগে না। একই অক্ষাংশের দক্ষিণ মেরুতে শীতকালের তাপমাত্রা উঠতে পারে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত। এ পর্যন্ত কোনও চীনা গবেষক দক্ষিণ মেরুর স্টেশনে শীতকাল কাটাননি।