আকাশ ছুঁতে চাই ৩
তার ব্যবসা বেশ ভালোভাবে এগিয়ে চলে। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার সময় ক্রেতারা সু’র তৈরি প্যানকেক উপহার হিসেবে নেয়া শুরু করেন। কারণ এগুলো দেখতে সুন্দর আবার খেতেও ভালো। উপহার হিসেবে এর কদর বাড়তে থাকে।
এই এলাকায় প্রচুর পিচফল জন্মায়। প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই পিচফলের গাছ আছে। সু তাই প্রথমে পিচ ফ্লেভারড প্যানকেক দিয়ে তার যাত্রা শুরু করেন।
তিনি এখন ৫০ এরও বেশি ধরনের প্যানকেক বানাচ্ছেন। রং করার জন্য তিনি প্রাকৃতিক বিভিন্ন ফল যেমন ড্রাগন ফ্রুট, কুমড়ো, তিল, লাল জুজুবি ইত্যাদি বেছে নিয়েছেন।
চার বছর আগে তার চিন্তা আসে প্যানকেকের ফুল বানানোর। সুর স্বামী চাও চিয়ান মনে করেছিলেন এটা সম্ভব হবে না। কারণ পিচ হলো মচমচে একটা ফল। এটা দিয়ে ফুলের আকৃতি দেয়া সম্ভব নয়। কিন্তু নিজের সৃজনশীলতায় এটাকে সম্ভব করেন সু।
তিনি চারদিন ধরে চেষ্টা করেন। নানাভাবে কেকটাকে বাঁকা করে ফুলের পাঁপড়ির আকার দেয়ার জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত কিছুটা ফুলের মতো দেখতে হয় সেটা। এটুকু সাফল্য পেয়ে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন তিনি। আসল ফুল দেখে দেখে নিখুঁতভাবে বানানোর চেষ্টা করতে থাকেন সু।
তিনি বলেন, ‘ঠিক কখন এটা বাঁকানো যাবে তার একটা সঠিক সময় আছে। বেশি নরম বা ভেজা অবস্থাতেও নয় আবার বেশি শুকনো অবস্থাতেও নয়, ঠিক সময়ে এটাকে বাঁকিয়ে ফুলের মতো আকার দিতে হয়।
ক্রমাগত তিনমাস ধরে চেষ্টার পর সু তার কাজে দক্ষ হয়ে ওঠেন। লাল, হলুদ, কমলা, গোলাপি বিভিন্ন রঙের ফুল বানানো শুরু করেন তিনি। ক্রেতারা খুব উৎসাহের সঙ্গে তার তৈরি প্যানকেক কেনে। তার তৈরি এক ঝুড়ি প্যানকেকের দাম ৮৮ ইউয়ান। যা সাধারণ প্যানকেকের দশগুণ।
মা দিবস, নারী দিবসের মতো বিশেষ দিনগুলোতে তার তৈরি প্যানকেকের চাহিদা অনেক বেড়ে যায় কারণ সকলেই চায় প্রিয়জনকে নতুন কিছু উপহার দিতে।
চলতি বছর বসন্ত উৎসবেও তার অনেক ফুল বিক্রি হয়েছে। উৎসবের আগে সুর সঙ্গে যোগ দেন আরও কয়েকজন গ্রামবাসী নারী। সুর প্রতিষ্ঠানে কাজ করে এই নারীরা তাদের বাড়তি উপার্জনের পথ পেয়েছেন।এরা নিজের গেৃহকর্ম এবং শিশু ও বয়স্কদের যত্ন নিয়ে অবসর সময়টায় সুর প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চলে আসেন। এতে গ্রামীণ নারীদের কর্মসংস্থান হচ্ছে ভালোভাবেই।