আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ৯০
১৮ তম সিপিসি জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে নারীদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় শতাধিক বিধান সম্বলিত আইনি ব্যবস্থা গঠন করেছে দেশটির সরকার। চলতি বছর, নারীর অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষায় যে আইনটি করা হয়েছে তা সমাজে বড় পরিবর্তনের সূচনা করছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
লি মিংশুন, উপপ্রধান, চীন আইনের বিবাহ ও পারিবারিক বোর্ড। তিনি বলেন,
‘নারীর অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষা আইনের সংশোধিত খসড়াটি শুধুমাত্র নারীর অধিকার এবং স্বার্থের সমান সুরক্ষাকে শক্তিশালী করে না, বরং নারীর বিশেষ চাহিদার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেয়, যা নারীর মানবাধিকারের প্রতি প্রদত্ত সম্মান ও সুরক্ষাকে সম্পূর্ণরূপে প্রতিফলিত করে।’
লিঙ্গ সমতার মৌলিক জাতীয় নীতি মেনে চলা, এবং নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের বৈধ অধিকার রক্ষায় কাজ করছে চীন সরকার। শুধু তাই নয়, চীন জ্ঞান বিজ্ঞান এবং উদ্ভাবনকে জোরালোভাবে সমর্থন করায় এর প্রসারে বিভিন্ন নীতিমালাও গ্রহণ করা হয়েছে। প্রযুক্তিগত গবেষণায় অংশগ্রহণ, মহাবিশ্বের অন্বেষণ থেকে শুরু করে গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনে অবদান, খেলাধুলার শীর্ষ স্তরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি সফলভাবে কাজ করছেন চীনা নারীরা। এভাবেই কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আধুনিক চীনে ক্রমাগত বিশাল অবদান রাখছেন নারীরা।
পরিসংখ্যান বলছে, গত দশ বছরে, চীনের বাধ্যতামূলক শিক্ষায় লিঙ্গ ব্যবধান কার্যকরভাবে দূর করা হয়েছে এবং উচ্চশিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের অনুপাত ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। কর্মশক্তিতে নারী কর্মচারীর অনুপাত ৪০ শতাংশেরও বেশি।
২০১০ সালে নারীদের গড় আয়ু ছিল ৭৭ দশমিক ৩৭ বছর। যা ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ দশমিক ৮৮ বছর। গেল বছর মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৬ শতাংশ কমেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মা ও শিশু স্বাস্থ্যে সর্বোচ্চ কর্মক্ষমতা ভিত্তিক তালিকায় বিশ্বের ১০টি দেশের মধ্যে চীন যায়গা করে নিয়েছে।
চুয়াং জাতির সাহসী নারী লিউ সানচিয়ে
চীনের ৫৬ জাতির অন্যতম চুয়াং জাতি। এই জাতির রয়েছে অনেক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। আধুনিক গ্রাম উন্নয়নের ধারায় চুয়াং জাতিকে সম্পৃক্ত করার কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন একজন সাহসী নারী লিউ সানচিয়ে। তিনি কিভাবে গ্রাম উন্নয়নে নেতৃত্ব দিলেন সেই ঘটনা নিয়ে কুয়াংসি ড্রামা অ্যাকাডেমি মঞ্চে এনেছে একটি নতুন নৃত্যনাট্য। শুনবো এই নৃত্যনাট্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন।
চীনের কুয়াংসিছুয়ান প্রদেশের চুয়াং জাতির একজন সাহসী নারী লিউ সানচিয়ে। তিনি কিভাবে গ্রাম উন্নয়নের নতুন লক্ষ্য অর্জনে নেতৃত্ব দিলেন সেই কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে ‘নিউ লিউ সানচিয়ে’ নামের নতুন নৃত্যনাট্যে।
চীনের ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্যের ধারায় তুলে ধরা হয়েছে একজন সাহসী নারীর জীবন। উত্তর চীনের বিখ্যাত নগরী থিয়ানচিনের মঞ্চে পরিবেশিত হচ্ছে নৃত্যনাট্য ‘নিউ লিউ সানচিয়ে’।
কুয়াংসি ড্রামা অ্যাকাডেমি মঞ্চে এনেছে এই অপেরা। এই নাটকে গ্রাম উন্নয়নের নতুন ধারা, নিজেদের হোম টাউনের প্রতি চুয়াং জনগণের ভালোবাসা, তাদের সমৃদ্ধ লোকজ শিল্প ও সংস্কৃতি এবং উন্নত জীবনের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরা হয়েছে।
নিউ লিউ সানচিয়ে নাটকটি পরিচালনা করেছেন একজন কৃতী নির্দেশক লং ছিয়ান। নাট্য নির্দেশক হিসেবে তিনিও একজন খ্যাতিমান নারী। এই নৃত্যনাট্যে তিনি আধুনিক সংগীতের সঙ্গে কুয়াংসি অঞ্চলের চুয়াং জাতির জীবন ও তাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। নতুন যুগে চুয়াং জাতির জীবনকে তুলে ধরেছেন। এই নতুন ও বিশেষ শৈল্পিক ধারণা তুলে ধরাই এর লক্ষ্য।