আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ৩৯-China Radio International
নারী সাংবাদিকদের হয়রানি রোধে হাইকোর্টের রায়ের বাস্তবায়ন চাই
কী থাকছে এবারের পর্বে
১. সাক্ষাৎকার : প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র
২. নারী অরণ্যরক্ষী দল
৩. গান: আ লিন
৪. কেমন আছেন আফগান নারী
৫. নতুন পেশায় সিনচিয়াংয়ের নারী
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।
বাংলাদেশের নারীরা বিভিন্ন পেশায় অংশগ্রহণ করছেন এবং এগিয়ে চলেছেন। সাংবাদিকতাকে একসময় মনে করা হতো পুরুষের পেশা। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকরা নিজেদের পরিশ্রমে এ পেশায় জায়গা করে নিয়েছেন। নারী সাংবাদিকদের বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে এখন আমরা কথা বলছি বাংলাদেশে নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনুর সঙ্গে।
সাক্ষাৎকার:
নারী সাংবাদিকদের হয়রানি রোধে হাইকোর্টের রায়ের বাস্তবায়ন চাই—প্রেসিডেন্ট বিএনএসকে
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের প্রেসিডেন্ট নাসিমুন আরা হক মিনু দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় ধরে গণমাধ্যমে কাজ করছেন। ২০০১ সালে তিনি নারী সাংবাদিকদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র(বিএনএসকে) যা বর্তমানে বাংলাদেশের নারীর সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন। সাক্ষাৎকারে নাসিমুন আরা হক নারী সাংবাদিকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন বাংলাদেশে এখনও গণমাধ্যমে পুরুষের তুলনায় নারী সাংবাদিকের সংখ্যা অনেক কম। বিশেষ করে পত্রিকায় নারীর সংখ্যা কম। পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারী সাংবাদিকরা অনেক সময় বৈষম্যের শিকার হন। মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়ার বেলাতেও কর্তৃপক্ষ অনেক সময় নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যমে ছাঁটাই শুরু হলে নারী সাংবাদিকরা অন্যায়ভাবে ছাঁটাইয়ের শিকার হয়। মিডিয়ায় নারী সাংবাদিকরা অনেক সময় যৌন হয়রানির শিকার হয়। কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের রায় রয়েছে। প্রতিটি অফিসে অভিযোগ বাক্স স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি অফিসে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি থাকার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই রায় কার্যক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করা দরকার অবিলম্বে।
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র দীর্ঘ বিশ বছর ধরে নারী সাংবাদিকদের পেশাগত উন্নয়নে ভূমিকা পালন করছে, তাদের বিভিন্ন দাবীও তুলে ধরেছে। বিএনএসকে প্রতিটি গণমাধ্যমে ৩০ শতাংশ নারী সাংবাদিকের নিয়োগ দাবী করছে।
মিডিয়ায় নারী সাংবাদিকদের সমস্যা সমাধানে তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেন নাসিমুন আরা হক।
সুপ্রিয় শ্রোতা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের অনুষ্ঠান আকাশ ছুঁতে চাই। অরণ্যরক্ষী বা রেঞ্জার কথাটি শুনলে একজন পুরুষের চেহারাই প্রথম মনে পড়ে। কিন্তু রেঞ্জারের পেশায় নারীরাও সফল হচ্ছেন। বিশেষ প্রতিবেদনে শুনুন সেই গল্প।
নারী অরণ্যরক্ষী দল
চীনের উত্তরের প্রদেশ তুষার ঢাকা হেইলংচিয়াং। এখানে রয়েছে নিবিড় অরণ্য এবং জীব বৈচিত্র্য। এই অরণ্যে রেঞ্জার হিসেবে কৃতিত্বের পরিচয় দিচ্ছে নারী রেঞ্জারদের একটি দল। ছাওইয়াংকোও অরণ্যে এই দলের মূল কাজ হলো জঙ্গলের ভিতরে স্থাপিত ইনফ্রারেড ক্যামেরাগুলোর দেখভাল করা, বুনো জন্তু বিশেষ করে বিরল প্রজাতির প্রাণীদের খুঁজে বের করে তাদের গতিবিধি নজরে রাখা। চিলিনে নর্থওয়েস্ট চায়না টাইগার অ্যান্ড লিওপার্ড ন্যাশনাল পার্কে কাজ করেন এই দলের নারীরা। তারা তুংনিং ফরেসট্রি ব্যুরোর অধীনে কাজ করছেন।
ছয় জনের এই নারী রেঞ্জার দলের নেত্রী হলেন সু ছুনমেই। সুয়ের জন্ম এই অরণ্যেই। তারা তিন প্রজন্ম ধরে অরণ্যরক্ষীর কাজ করছেন। তিনি লেখাপড়াও করেছেন ফরেস্ট্রি বিষয়ে। ২০১৮ সালে যখন তিনি শোনেন অরণ্য রক্ষী দলে নারীদের নেয়া হচ্ছে তখন আর দেরি না করে যোগ দেন রেঞ্জারের কাজে।
সু ছুনমেই বলেন, ‘কাজের সময় আমরা ওয়াইল্ড লাইফ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন চালিয়ে যাই। যখন আমরা কোন প্রাণীর পদচিহ্ন সনাক্ত করি তখন খুব খুশি লাগে ‘
এই চ্যালেঞ্জিং কাজটিকে আগে পুরুষদের বলে ধরে নেয়া হতো। নারীরা অরণ্যের বুনো জন্তু রক্ষার বিপদজনক কাজ করবে এমনটি ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্যি যে পুরুষদের চেয়েও নারীরা বেশি ভালো কাজ করছেন।
ফরেস্ট ফার্মের ডেপুটি ডিরেক্টর নারী দলের প্রশংসা করে বলেন,‘ এই অরণ্যে ২০ জন রেঞ্জার আছে। নারী দলটি সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করছে। তাদের ওয়ার্ক প্ল্যান ভালো তারা সবচেয়ে বেশি তথ্যও সংগ্রহ করেন।’
অরণ্যের আশপাশের গ্রামে বন্যপ্রাণী বিষয়ক সচেতনতা তৈরিতেও নারী রেঞ্জাররা কাজ করছেন।
প্রিয় শ্রোতা এখন রয়েছে চীনের তাইওয়ানের জনপ্রিয় শিল্পী আ লিনের কণ্ঠে একটি গান। গানটির শিরোনাম এক ধরনের বিষণ্নতা। গানটিতে অতীত স্মৃতি ও ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে।