চীন ও চীনের বাইরের দুনিয়ার ‘ব্যবসা-অর্থনীতি-বানিজ্যের হালচাল নিয়ে সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান
“আমরা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উন্নত জাতের অন্তত ৪শ’টি কৃষিপণ্য উদ্ভাবন করেছি। গেল বছরও এই মেলা কোকোয়া বিনস বেলজিয়ামে রফতানির আদেশ পাই। এ বছর জার্মানির ক্রেতাদের সঙ্গে কফি রফতানির চুক্তি সই করেছি। আমরা আশা করি এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাইনানেন উন্নত জাতের ফসল সারা বিশ্বে পৌছে দিতে পারবো।“
মেলায় নিজেদের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছে চিলি, ফ্রান্স ও জার্মানিসহ সারা বিশ্বের ৬৫টি দেশ ও অঞ্চল থেকে অংশ নিয়েছে ৩ হাজার ৩শ’ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোও। জার্মানির বিখ্যাত গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফোক্সভাগেনও যোগ দিয়েছে প্রদর্শনীতে। নিজেদের তৈরি করা সবশেষ নতুন মডেলের গাড়ি নিয়ে হাজির হয়েছে চীনের ক্রেতাদের কাছে। ফোক্সভাগেনের চীনা অঞ্চলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিফেন মেশা জানান, গেল ৪ দশকে চীনের বাজারে ব্যবসা পরিচালনার ইতিবাচক অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের।
স্টিফেন মেশা, প্রধান নির্বাহী, ফোক্সভাগেন কার ফর চায়না
“আমাদের দুটো বড় অংশীদারী কোম্পানি হলো জার্মানির সাইক ফোক্সভাগেন ও ফাও ফোক্সভাগেন। আমাদের এই অংশীদারিত্ব এতোটাই মজবুত যে গেল ৪০ বছর ধরে এটি চলছে। এই দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ও একত্রে পথচলায় আমরা আরো নিত্য নতুন মডেলের গাড়ি তৈরি করতে চাই, বিশেষ করে ইলেক্ট্রিক গাড়ি তৈরিতে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চাই। আমাদের পরিকল্পনা হলো, ২০২৪ সালের মধ্যে চীনে আমরা ১১০ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগ করবো।“
এবারের মেলায় কয়েক হাজার নতুন পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছে কয়েক শ’ কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব কারখানায় উৎপাদিত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পণ্য, আধুনিক প্রযুক্তিবান্ধব স্মার্ট পণ্য ও ফ্যাশন সামগ্রী।
কেবল পণ্য নয়, এই মেলায় ছিলো বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয় করিয়ে দেওয়ার অন্তত ২শ’ ম্যাচমেকিং উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান। অনলাইন ও অফলাইনে নানা রকমের সেবার প্রতিশ্রুতিয়ে নিয়ে হাজির ছিলো তারা। মেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, এবার মেলার পরিসর গেলবারের চেয়ে ২০ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় ১ লাখ বর্গমিটার।
আয়োজকরা বলছেন, গেল ৫ বছরে হাইনানে যে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে নানা ধরনের সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় সেগুলো বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করেছে। বিশেষ করে স্থানীয় ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন করা হয়, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে চীনের বাজারে প্রবেশ উৎসাহিত করতে ও চীনে বিনিয়োগ করতে ‘লেটিং ফার্মস ইন অ্যান্ড ডু বিজনেস’ নীতি নেওয়া হয়। পাশাপাশি হাইনানের ফ্রি ট্রেড পোর্ট নীতির সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোকে এখানে আসতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কেবল বিনিয়োগ ও বাণিজ্যেই ভূমিকা পালন করছে না বরং হাইনানের পর্যটন বিকাশে সহযোগিতা করছে। পাশাপাশি হাইনান হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য ও সেবা প্রচারণার প্রাণকেন্দ্র।