বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ‘ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে’
বরগুনা জেলায় ভেসে গেছে ৪৬৮ দিঘি, পুকুর ও খামার। চাষির সংখ্যা ৩৯৩। মাছ ভেসে গেছে ৮৩ মেট্রিক টন। নার্সারী থেকে পোনা ভেসে গেছে দুই লাখ। ভেসে যাওয়া মাছে ক্ষতি হয়েছে ৯৯ লাখ টাকা। সাত লাখ টাকার পোনা ভেসে গেছে। নৌকা ও ট্রলার ডুবেছে ৫টি। ক্ষতি হয়েছে ৬ লাখ টাকা। অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে ৮ লাখ টাকা। মোট ক্ষতি হয়েছে এক কোটি ২০ লাখ টাকা।
পিরোজপুর
পিরোজপুর জেলায় ক্ষতি হয়েছে ৩৭৫টি দীঘি, পুকুর ও খামার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪১৯ জন। মাছ ভেসে গেছে ১২৭ মেট্রিক টন। ভেসে যাওয়া মাছের মূল্য এক কোটি ৯২ লাখ টাকা। অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। মোট ক্ষতি হয়েছে এক কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
মুন্সিগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ৭৫০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জে ইতোমধ্যে শীতকালীন সবজি চাষ শুরু হয়েছে। কিন্তু সবজি ক্ষেতগুলো ঝড়-বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ, টঙ্গিবাড়ী ও সিরাজদিখান উপজেলায় এবার সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৮৭ হেক্টর জমিতে আগাম সবজির চাষ হয়েছে। এসব সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো ও শালগম প্রধান। সোমবার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ১৯০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২৬০ হেক্টর রোপা আমন, এক হেক্টর করে মরিচ, খেসারি, কলাইয়ের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নোয়াখালী
নোয়াখালীতে পাঁচটি উপজেলায় কমপক্ষে ১ হাজার ৩০৩টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে হাতিয়ার ৪৪০টি বাড়িঘর। খুলনায় ১ হাজার ৬০০ ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর জলোচ্ছ্বাস না হওয়ায় ও কোথাও বেড়িবাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষতির হাত থেকে বেঁচেছে মাছের ঘের ও জমির ফসল।
বরিশাল বিভাগে পল্লী বিদ্যুতের ক্ষতি প্রায় ‘তিন কোটি’ টাকা
সিত্রাংয়ের প্রভাবে ভারি বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে বরিশাল বিভাগে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বরিশাল বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দীপঙ্কর মন্ডল ও উপ-পরিচালক (কারিগরি) মো. আক্তারুজ্জামান স্বাক্ষরিত ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তথ্য বিবরণী থেকে জানা গেছে, বরিশাল জোনের আওতাধীন বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ ও ২ পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী ও ভোলা সমিতির বিভিন্ন স্থানে ৩৩২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে। এছাড়া ক্রস আর্ম ভেঙেছে ৫৮২টি, টান্সফরমার নষ্ট হয়েছে ১১৯টি, তার ছিঁড়েছে তিন হাজার ৮৩ স্থানে, মিটার নষ্ট হয়েছে এক হাজার ১৭৪টি, ‘ইন্সুলেটর ক্র্যাক’ করেছে ৪৯৫টি।