মেড ইন চায়না পর্ব-৪ ছাতা
তিন নম্বর গল্পটা হলো, বৃষ্টির মধ্যে একদল শিশুকে দেখেন ইউন। বৃষ্টিতে মাথা যেন না ভেজে এ জন্য ওই শিশুদের হাতে ছিল উল্টো করে ধরে রাখা পদ্মপাতা। ইউন ভাবলেন, এক টুকরো কাপড়কে একটা কাঠামোর মধ্যে আটকে দিলেই কাজটা সহজ হয়ে যায়। পদ্মপাতার মতো বারবার আর ছাউনিটা বদলাতে হবে না।
মূলত মাথা ঢেকে বৃষ্টি বা রোদ আটকে দিলেই কিন্তু সেটা ছাতা হয়ে যায় না। ইউনের মূল আবিষ্কারটা ছিল মূলত ছাতার কাঠামো তৈরি এবং পানিরোধক বস্তু দিয়ে এমনভাবে বানানো যাতে করে সেটাকে নিয়ে সহজে চলাফেরা করা যায়। মজার ব্যাপার হলো, সাড়ে তিন হাজার বছর পেরিয়ে গেলেও সুপ্রাচীন চীনে তৈরি ছাতার কাঠামোটা কিন্তু আগের মতোই আছে।
অনুষ্ঠানের এই ফাঁকে ছাতা নিয়ে দুটি মজার তথ্য জেনে রাখুন
চীনে সাড়ে তিন হাজার বছর আগে আবিষ্কার হলেও ইউরোপে ছাতার ব্যবহার শুরু হয় আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে। কিন্তু ওই সময় ছাতা শুধু ইউরোপীয় নারীদের হাতেই দেখা যেত। এমনকি ওই সময় অভিধানেও ছাতা তথা আমব্রেলার অর্থ লিখতে গিয়ে বলা হয়েছে, এটি কাপড়ের তৈরি এমন এক বস্তু যা নারীরা ব্যবহার করে। পরে ১৭৫০ সালের দিকে লন্ডনের লেখক জোনাস হানওয়ে প্রথম ইউরোপীয় পুরুষ হিসেবে ছাতা ব্যবহার করতে শুরু করেন। মূলত তার দেখাদেখিই পরে অন্য ইংরেজ পুরুষরাও একযোগে ব্যবহার করতে শুরু করে ছাতা।
প্রথম দিকে চীনে ছাতা তৈরিতে রেশম ব্যবহার করা হলেও পরে এতে যুক্ত হয় কাগজ। এতে করে ছাতার দাম চলে আসে সাধারণ চীনাদের হাতের নাগালে। রোদে ক্ষতি না হলেও পানিতে কাগজ নষ্ট হয়ে যাবে বলে তাতে লাগানো হয় তেলের একটি আস্তর। আর এভাবেই আবিষ্কৃত হলো অয়েল পেপারে তৈরি বিশ্বের প্রথম ওয়াটারপ্রুফ ছাতা। অবশ্য এখনকার ছাতাগুলোকে পানিরোধক করতে আর তেল নয়, ব্যবহার করা হয় টেফলন নামের একটি রাসায়নিকের প্রলেপ।