চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-৫২
প্রতিবেদন: রওজায়ে জাবিদা ঐশী /সম্পাদনা: মাহমুদ হাশিম।
২. চীনের ৮ হাজার বছর আগেকার হাড়ের বাঁশি
চীনের খ্যাতিমান বাঁশির কারিগর তিন ইনকংয়ের বাড়ি পূর্ব চীনের চেচিয়াং প্রদেশের হাংচৌয়ের চংথাই এলাকার চিচিং গ্রামে। বাঁশের বাঁশি তৈরির জন্য খ্যাতি রয়েছে গ্রামটির। সারা দুনিয়ায় তৈরি বাঁশের বাঁশির ৮০ ভাগ তৈরি হয় এ গ্রামে। এর রয়েছে ২ হাজার বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা বাঁশি তৈরির কাজটিতে ছোটবেলাতেই পরিপক্ক হয়ে ওঠেন তং।
মধ্য চীনের হেনান প্রদেশের উইয়াং কাউন্টির চিয়াহুতে ৮-৯ হাজার বছর আগেকার হাড়ে তৈরি বাঁশিটি আবিষ্কৃত হবার পর, সারা দেশের বাঁশির কারিগররা এটি তৈরি করতে উঠেপড়ে লাগেন।
তাদেরই একজন তং অক্লান্ত চেষ্টায় পুনরায় তৈরি করতে সক্ষম হন-শুধু চীন নয়, বিশ্বের আদিতম বায়ুনির্ভর এ সংগীত যন্ত্রটি।
প্রাচীন চীনা কারিগররা ছয় ছিদ্র বিশিষ্ট বাঁশিটি তৈরি করতেন লালঝুঁটির সারসের হাড় দিয়ে। কিন্তু এ পাখিটি বর্তমানে চীনে জাতীয়ভাবে সংরক্ষিত প্রাণীর তালিকায় থাকায় বেকায়দায় পড়েন তং।
হাল না ছেড়ে এর বদলে তিনি ময়ূর এবং টার্কির হাড় দিয়ে বাঁশি তৈরির পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান এবং ২০২১ সালে চিয়াহু হাড়ের বাঁশি তৈরিতে সফল হন।
তং বলছিলেন তার সেই প্রচেষ্টার কথা:
আমি টানা দু’মাস এ কাজটি করেছি। যখন আমি বাঁশিটি তৈরিতে সফল হলাম তখন আমার আনন্দের সীমা ছিল না। রাত তখন ২টা। আমার ছেলেমেয়েরা নিচের ঘরে ঘুমিয়ে আছে। আমি টয়লেটে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম এবং বাঁশিটা বাজাতে শুরু করলাম। বাঁশির সুরটি ছিল প্রাচীন সময়ের মতো, তাতে ছিল প্রাচীন চীনা সংস্কৃতির মোহনীয়তা।
এমন একটি শ্রম সাপেক্ষ ও অলাভজনক কাজে কেন উৎসাহী হলেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তং বললেন চীনা সংস্কৃতির প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগের কথা: