চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-৪৯
‘আমি মনে করি যে কোনো চলচ্চিত্র উৎসবের নিজস্বতা থাকতে হয়। আয়োজক শহরের ওপর এর বড় প্রভাব পড়ে আর স্থানীয় বাসিন্দারা বিশ্বের সেরা ছবিগুলো দেখেন এবং তাদের জীবনধারাও প্রভাবিত হয় এতে'।
চীনা অভিনেতা হুয়াং সিয়াওমিং মনে করেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে এ উৎসবের মাধ্যমে চীনা চলচ্চিত্র শিল্প পুনরায় চাঙ্গা হয়ে উঠছে।
‘আমি মনে করি চীনা চলচ্চিত্র শিল্প খুবই উজ্জ্বল। এর অসাধারণ একটা ইতিহাস রয়েছে। কোভিড মহামারির কারণে এতে ভাটা পড়েছিল। তবে এখন এটি পুনরায় চাঙ্গা হচ্ছে’।
বিশ্বের অন্যতম রিসোর্ট দ্বীপ হাইনান। এখানে রয়েছে একটি মুক্ত বাণিজ্য বন্দর। এ দুটির সম্মিলন হাইননাকে চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটি চমৎকার স্থান করে তুলেছে।
প্রতিবেদন: মাহমুদ হাশিমৃ।
৩. এবার চিরায়ত চীনা সাহিত্য
চাং চি : চিত্রকল্পময়তার কবি
চিরায়ত চীনা কবি চাং চি’র বিষয়ে খুব সামান্যই জানা গেছে। তবে তিনশ থাং কবিতার বিখ্যাত সংকলনে তার কবিতা অন্তর্ভুক্ত থাকায় তিনি যে সত্যিই থাং যুগের কবি সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।
চাং চি’র জীবন বিষয়ে যতটুকু জানা গেছে তাতে পণ্ডিতরা মনে করেন তার জন্ম হুবেই প্রদেশে। সে সময় এ স্থানের নাম ছিল সিয়াংইয়াং। ৭১২ থেকে ৭১৫ সালের মধ্যে তার জন্ম। মৃত্যুর তারিখও অনিশ্চিত। তবে গবেষকরা মনে করেন ৭৭৯ সালে তার মৃত্যু হয়। ছাং ছি এবং ইসুন নামেও তার পরিচিতি ছিল। ৭৫৩ সালে তিনি সরকারী চাকরির জন্য রাজকীয় পরীক্ষা চিনশি পাশ করেন। তিনি রাজস্ব বিভাগে চাকরি করতেন। তিনি একসময় রাজস্ব বিভাগের সচিব পর্যন্ত হয়েছিলেন।
চাং চি’র বেশিরভাগ কবিতা তার ভ্রমণের সময় লেখা হয়েছে। তিনি সহজ সরল ও ঋজু ভাষায় কবিতা লিখতেন। সহজ শব্দ ব্যবহার করতেন। কিছু সরল উপমার মাধ্যমে তিনি তার জীবনবোধকে তুলে ধরেছেন। তার ৫০টির মতো কবিতা কালের স্পর্শ এড়িয়ে এখনও বেঁচে আছে।
তার সবচেয়ে বিখ্যাত কবিতা হলো ‘রাতে ম্যাপল সেতুর কাছে নোঙর’। কবিতাটি শোনাচ্ছি
হিমশীতল আকাশকে চিরে দিচ্ছে রাতজাগা পাখির কর্কশ চিৎকার
টিমটিমে আলোয় ম্যাপল সেতুর নিচে জেলে নৌকাগুলো নিশ্চলভাবে শুয়ে আছে
নগরপ্রাচীরের পাশে শীত-পাহাড়ের মন্দির থেকে ভেসে আসা ঘন্টাধ্বনিতে
নৌকার ভিতরে থাকা মাঝি ঘুম ভেঙে দেখে তখনও স্থবির মধ্যরাত।
এই কবিতায় এক অসামান্য চিত্রকল্প ফুটে ওঠে। বিষণ্ন রাত্রি , জেলে নৌকার ভিতরে থাকা শীতার্ত নাবিকদের গৃহকাতর অনুভূতি এবং পাহাড়ের উপরের মন্দির থেকে ভেসে আসা ঘন্টাধ্বনিতে গম্ভীর এক পরিবেশ মূর্ত হয়ে ওঠে। এই চিত্রকল্পগুলো চীনের প্রাচীন জীবনযাত্রা, ভ্রমণকারীর কষ্ট ও বিষণ্নতাকে তুলে ধরেছে। এই আপাত সরল অথচ গভীর বোধের চিত্রকল্পের জন্য চিরায়ত চীনা সাহিত্যে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন কবি চাং চি।
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া/সম্পাদনা: মাহমুদ হাশিম।
---------------------------------------------------------------------------
সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম
অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ।