চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-৪৬
প্রায় বিশ বছর সুকে নির্বাসনে কাটাতে হয়। তবে সে সময়েই তার শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলো লেখা হয়। নির্বাসনে থাকার সময় সু শির লেখা একটি কবিতা শোনাচ্ছি আপনাদের।
পুত্রের জন্ম উপলক্ষ্যে
পরিবারে যখন একটি শিশুর জন্ম হয়
সবাই আশা করে সে বুদ্ধিমান হবে।
অথচ আমি বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে
আমার সারা জীবন নষ্ট করে ফেলেছি।
আমি শুধু আশা করি নবজাতক প্রমাণ করবে
সে অজ্ঞ এবং বোকা
তাহলে সে সুখে দিন কাটাবে
এবং বড় হয়ে দরবারে মন্ত্রী হবে।
এই কবিতায় প্রকারান্তরে রাজমন্ত্রীদের অজ্ঞ এবং মূর্খ বলে উপহাস করা হয়েছে। কারণ সুশি মনে করতেন একমাত্র বোকারাই চোখ বন্ধ করে চাটুকারিতা করতে পারে। বুদ্ধিমান বিচক্ষণ মানুষ কখনও নির্লজ্জভাবে চাটুকারিতা করতে পারে না। আর চাটুকারিতা না করলে মন্ত্রী হওয়া বা বড় পদে আসীন হওয়া সম্ভব হয় না। কবিতায় এ ধরণের সত্যভাষণ এবং প্রতিবাদ সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তার স্যাটায়ারধর্মী লেখাগুলোর কারণে তিনি জনসাধারণের প্রিয় হয়ে ওঠেন।
শুধু কবিতা নয় তাঁর আঁকা ছবি এবং ক্যালিগ্রাফিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তার কবিতা লোকের মুখে মুখে ফিরতো। ১১০০ সালে সু শি’র নির্বাসন দণ্ড মওকুফ হয়। তাঁকে নতুন কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় ছেংতুতে। নতুন কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ছাংচোওতে ১১০১ সালের ২৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন সু শি।
মৃত্যুর পর তার জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়। দূর দূরান্তের মানুষ তার ছবি ও হস্তলিপি সংগ্রহে উৎসাহী হয়ে ওঠে। তার কবিতা চীনা চিরায়ত সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া
---------------------------------------------------------------------------
সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম
অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ।