বাংলা

চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-৪১

CMGPublished: 2023-11-04 16:59:41
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

‘প্রাচীন সিল্ক রোড যে দেশুগুলোকে সংযুক্ত করেছিল তার বেশির ভাগই ছিল আরব দেশ। প্রাচীন সিল্ক রোড আসলে সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে একটা সেতুবন্ধ ছিল। একই কথা বলা চলে এক অঞ্চল এক পথ উদ্যোগ বা নতুন সিল্ক রোড সম্পর্কে’।

চলতি বছরের জুলাইতে বেইজিংয়ে প্রথম বিশ্ব চীনবিদ্যা বিশারদ সম্মেলন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের শুভেচ্ছা বার্তার গুরুত্ব তুলে ধরেন এই মিসরীয় বিশেষজ্ঞ:

‘অভিনন্দ বার্তায় চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, চীনবিদ্যা বিশারদরা হলেন বিভিন্ন সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে সাংস্কৃতিক সমন্বয়ের দূত। সি চিনপিং চীন-বিশেষজ্ঞদের সমর্থন করছেন, তাই তাদের দায়িত্ব হচ্ছে চীনের সৃষ্টিশীল কাজগুলোকে সারা বিশ্বের কাছে নিয়ে যাওয়া এবং এটি তুলে ধরা যে চীন ভিন্ন সংস্কৃতি, সভ্যতা ও মূল্যবোধকে স্বাগত জানায়’।

প্রেসিডেন্ট সি’র তাৎপর্যপূর্ণ শুভেচ্ছা বার্তা সম্মেলনের অংশ নেয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দেড় শ’র বেশি চীন বিশেষজ্ঞ ও অনুবাদককে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আবদেল আজিজ হামদি।

প্রতিবেদন: মাহমুদ হাশিম।

৩. চিরায়ত চীনা সাহিত্য

ওয়েই ইংউ: শান্তিময় প্রকৃতির কবি

চীনের থাং রাজবংশের সময়কার একজন বিখ্যাত কবি ওয়েই ইংউ। ইপো এবং সিচাই নামেও তিনি পরিচিত। তাকে ওয়েই সুচৌ নামেও ডাকা হয়। কারণ তিনি দীর্ঘদিন সুচৌ শহরের গভর্নর ছিলেন।

ওয়েই ইংউর জন্ম ৭৩৭ খ্রিস্টাব্দে থাং রাজবংশের রাজধানী ছাংআন শহরে। তিনি খুব উচ্চ ও অভিজাত বংশের সন্তান ছিলেন। তার পূর্বপুরুষ ওয়েই তাইচিয়া সম্রাজ্ঞী উ চেথিয়ানের সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

ইংউ পনেরো বছর বয়সে সম্রাট সুয়ানচোং এর দেহরক্ষী ও সহচর হন। অভিজাত পরিবারের সন্তান ছিলেন বলে তাকে সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়নি। তিনি পরীক্ষা ছাড়াই রাজদরবারে চাকরি পান। সম্রাট সুয়ানচোংয়ের মৃত্যুর পর তিনি হু এবং ইয়ুয়েইয়াং কাউন্টির ম্যাজিস্ট্রেট হন। তিনি ৭৮৪ সালে ছুচোও ৭৮৫ সালে চিয়াংচৌ এবং ৭৮৭ থেকে ৭৯২ সাল পর্যন্ত সুচৌ শহরের গভর্নর ছিলেন। ৭৯২ সালে সুচৌ শহরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কবি ওয়েই ইংউ তার কবিতায় চীনের অসাধারণ সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যকে তুলে ধরেছেন। পঞ্চম শতকের কবি ইয়ুয়ান মিংয়ের প্রভাব তার কবিতায় লক্ষ্যণীয়। ওয়েই ইংউ পরিশীলিত ও সহজ ভাষায় কবিতা লিখতেন। তিনি প্রাকৃতিক দৃশ্যের উপমাকে ব্যবহার করেছেন। যেমন মাঝিবিহীন নৌকার দৃশ্যের মধ্যে তিনি শাসক বিহীন অরাজক দেশের তুলনা করেন।

ওয়েই ইংউর একটি কবিতা শোনাচ্ছি। কবিতার শিরোনাম-

ছুচোও এর পশ্চিম স্রোতধারায়

একা আমি বসে থাকতে ভালোবাসি নদীর তীরে যেখানে জন্মায় সবুজ ঘাস

সোনালি অরিওল পাখিরা গাছের পাতার ফাঁকে বসে গান গায়

সন্ধ্যায় বৃষ্টি নামে, উপচে পড়ে নদীর জল

একটি নিঃসঙ্গ নৌকা ভেসে যাচ্ছে এদিক থেকে ওদিকে নিস্পৃহভাবে।

এই কবিতায় ইংউ যে শান্তিপূর্ণ প্রকৃতির দৃশ্য এঁকেছেন তা পূর্ব চীনের একান্ত বৈশিষ্ট্য।

‘ওয়েই সুচৌ কাব্য’ নামে তার লেখা বইটি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ কাব্য সংকলন হিসেবে বিখ্যাত। সমকালে ওয়েই অন্য থাং কবিদের মতো জনপ্রিয়তা বা খ্যাতি পাননি। তবে পরবর্তিকালের কাব্যসমালোচকরা তার প্রতি সুবিচার করেছেন। তিনি থাং যুগের খুব বিখ্যাত কবি না হলেও শান্তিময় প্রকৃতির দৃশ্য কবিতায় চিত্রায়নের জন্য তার আলাদা অবস্থান নিশ্চয়ই রয়েছে।

প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া।

---------------------------------------------------------------------------

সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম

অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ।

首页上一页1234 4

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn