চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-১৫: মে দিবসের অবকাশে চীনজুড়ে বর্ণাঢ্য আয়োজন
১৯৭৭ সালে ফান ইয়াং নানচিং নর্মাল কলেজে ভর্তি হন। বিখ্যাত সেই কলেজটি তার প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক চিত্রকলা শিক্ষা। স্নাতক হবার পর সেখানে ২৩ বছর শিক্ষকতা করেন ফান ইয়াং। ২০০৫ সালে তিনি চীনের জাতীয় চিত্রকলা একাডেমির ল্যান্ডস্কেপ পেইন্টিং রিসার্স অফিসে পরিচালক নিযুক্ত হন। ফান ইয়াং মনে করেন, চীনের চিত্রকলা মূলত বিস্তৃত ক্যানভাস নিয়ে কাজ করে। তবে ছোটখাট বিষয়বস্তুতেও তার সমান নজর।
‘চীনের ঐতিহ্যিক চিত্রকলায় একটা দারুণ ব্যাপার আছে! চীনের চিত্রকলার থিম এবং ক্যানভাস খুবই বিস্তৃত। এক টুকরো কাগজে হাজার হাজার মাইলের নদী ও পর্বতমালা আঁকা যায়। আবার গুবরে পোকা, প্রজাপতি কিংবা ঘাসফুল- কিছুই গুরুত্ব হারায় না। প্রকৃতির ছোটখাট বস্তু দিয়েও আমরা নিজেদের প্রকাশে সিদ্ধহস্ত’।
ফানা ইয়াং মনে করেন শিল্পীদের একটু মুক্তমনা হতে হয়। তাদেরকে সামাজিক রীতি-রেওয়াজ ও সময়ের পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়। তাহলেই কেবেন একজন শিল্পী তাঁর তুলিতে সময়কে ধরতে পারেন। ৬৭ বছর বয়সী এ চিত্রশিল্পী মনে করেন তার কাজ নতুন যুগে নতুন মানুষের কাছে চীনের মহান আখ্যান তুলে ধরবে। কারণ চীনের অনিন্দ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে শুরু করে কোভিড মহামারি সামাল দিতে ব্যস্ত চিকিৎসাকর্মী- সবকিছুই তার তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়েছে।
এ ছবিটি কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ছবি। আমি এর নাম দিয়েছি রিডিং নোটস। আমি আসলে একটি আলোকচিত্র এঁকেছি। এটা খুবই আবেগতাড়িত করে। কিছু ডাক্তার একটি সিটি স্ক্যান বিশ্লেষণ করছেন, কেউ মাস্ক পরে আছেন, নার্সরা স্যালাইনের বোতল ধরে রয়েছেন। এটি একটি বিশেষ সময়ের অ্যাখ্যান।
ফান ইয়াং মনে করেন যখন একজন শিল্পী সময়ের দাবি আর নিজের হৃদয়ের স্পন্দনকে মেলাতে পারেন তখনই সৃষ্টি হয় শ্রেষ্ঠ চিত্রকর্মটি। ফান ইয়াং চীনের প্রথম চিত্রশিল্পী সুইজারল্যান্ডের লুসানের অলিম্পিক মিউজিয়ামে যার প্রদর্শনী হয়েছে।
২০২২ সালে বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিকসে নিজের তুলির আঁচড়ে টিম চায়নার অর্জনকে মূর্ত করেন ফান। অলিম্পিকসে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৯ সালে তিনি মর্যাদাপূর্ণ পিয়েরে দ্য কুবার্তিন মেডেলে ভূষিত হন।
চিরতরুণ খ্যাতিমান এ শিল্পী ফান ইয়াং এখন তার অগনন ছাত্রছাত্রীর জন্য অশেষ অনুপ্রেরণা ও পথের দিশারি।
------------------------------------------------------------------------------
প্রতিবেদন ও কণ্ঠ: রওজায়ে জাবিদা ঐশী, মাহমুদ হাশিম
অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ, রফিক বিপুল
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম
সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী।