চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-১০
এ বছর, কিছু রেস্তোরাঁ তরুণ ভোক্তাদের কাছে ঐতিহ্যবাহী এ খাবারকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ছিংতুয়ানে কাঁকড়ার মাংস যোগ করেছে।
চায়না ফুড ফেস্টিভ্যাল ২০২৩ সারা বছর ধরেই চলবে, এবং ক্যাটারিং শিল্পকে চাঙ্গা করতে ৭০টির মতো ইভেন্টের আয়োজন করবে।
৩. চিরায়ত চীনা সাহিত্য
কবি লি শ্যন: কৃষক-জীবনের ভাষ্যকার
থাং রাজবংশের একজন বিখ্যাত কবি লি শ্যন। তাকে ডিউক ওয়েনসু অব চাও বা চাওয়ের জমিদার ওয়েনসু নামেও ডাকা হয়। কুংছুই নামেও পরিচিত ছিলেন লি শ্যন।
লি শ্যনের জন্ম ৭৭২ খ্রিস্টাব্দে উসি শহরে। তবে তার জন্মসাল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তিনি অভিজাত পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার প্রপিতামহ চ্যান্সেলর ছিলেন। তার পিতামহ এবং পিতা দুজনেই জেলা প্রশাসক ছিলেন।
মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাবাকে হারান লি শ্যন। বাবার মৃত্যুর পর তাকে প্রতিপালন করেন মা লেডি লু। মা তাকে কনফুসিয়াসের রচনাবলী শিক্ষা দেন। লি শ্যন দেখতে ছিলেন ছোটখাটো। কিন্তু তিনি বেশ চটপটে বালক ছিলেন। কবিতা লিখতেন, গানের কণ্ঠও ছিল চমৎকার। এলাকায় কবি হিসেবে তার খ্যাতিও ছড়িয়ে পড়ে।
লি শ্যন সরকারি চাকরির জন্য চিনশি পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হন। রাজকীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিযুক্ত হন লি শ্যন। কিন্তু সেই চাকরি তার পছন্দ না হওয়ায় বাড়ি ফিরে যান।
এখানকার স্থানীয় যুদ্ধবাজ নেতা লি ছি’র সঙ্গে তার বিরোধ বাঁধে। কিছুদিন জেলখানাতেও থাকতে হয়। তবে লি ছির মৃত্যুর পর তিনি মুক্তি পান। তিনি বেশ কয়েকজন সম্রাটের অধীনে বিভিন্ন পদে চাকরি করেন।
৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন লি শ্যন। সারা চাকরি জীবন তাকে অনেক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অস্থিরতা, উত্থান পতনের ভিতর দিয়ে এগুতে হয়। অনেক বৈরিতা ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রেরও শিকার হন এই কবি। তবে তার কবিতার জনপ্রিয়তা কখনও কমেনি। তার কবিতায় চীনের কৃষক ও সাধারণ মানুষের দুঃখ প্রতিফলিত হয়েছে। লি শ্যনের একটি বিখ্যাত কবিতা ‘কৃষকরা’। শ্রোতাদের জন্য শোনাচ্ছি কবিতাটি। কবিতাটি দুই ভাগে বিভক্ত।
১
বসন্তে বপন করা প্রতিটি বীজ
শরতে আনবে সোনালি ফসল ।
উর্বর জমিতে কি ফল
যখন ক্ষুধায় মরাই কৃষকের নিয়তি।
২
তীব্র দুপুরে তারা আগাছা নিড়ায়
মাটিতে ঘাম ঝরে পড়ে
কেউ কি জানে কতটা শ্রমের বিনিময়ে
তৈরি হয় এক বাটি ভাত?
চীনের পরিশ্রমী দরিদ্র কৃষক জীবনের এমন বাস্তব বর্ণনা থাং যুগের খুব কম কবির লেখাতেই মেলে। আর এখানেই কবি লি শ্যন তার অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে অমর হয়ে আছেন।
----------------------------------------------------------------------
প্রতিবেদন ও কণ্ঠ: রওজায়ে জাবিদা ঐশী, মাহমুদ হাশিম, শান্তা মারিয়া
কবিতা অনুবাদ: শান্তা মারিয়া
অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী।