দেহঘড়ি পর্ব-০৫১
লক্ষণ: নিউরোপ্যাথির লক্ষণগুলো সূক্ষ্ম বা গুরুতর হতে পারে এবং এক রোগী থেকে আরেক রোগীর মধ্যে এ লক্ষণের ব্যাপক তারতম্য থাকতে পারে। তবে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলোর হলো হাত ও পায়ে অসাড়তা; অঙ্গে জ্বালাপোড়া বা তীক্ষ্ণ ব্যথা; স্পর্শ ও তাপের প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি অথবা হ্রাস; শারীরিক ভারসাম্যহীতা হ্রাস এবং পড়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়া; পেশীতে কম্পন বা খিঁচুনি; বসা অবস্থা থেকে দাঁড়ালে মাথা ঘোরা; মূত্রাশয় ও অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমস্যা; যৌন অক্ষমতা; এবং ওজন হ্রাস।
নিউরোপ্যাথির কারণ: দীর্ঘস্থায়ী নিউরোপ্যাথি সাধারণত অন্য কোনও রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। ডায়াবেটিস হলো নিউরোপ্যাথির সবচেয়ে সাধারণ কারণ। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৬০ শতাংশের বেশি মানুষের স্নায়ুর ক্ষতি হয়। রক্তে শর্করা বাড়লে রক্তনালীগুলো দুর্বল হয়ে যায়, যার ফলে স্নায়ুর প্রান্তে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছায় না। নিউরোপ্যাথির অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে আঘাতজনিত কারণে স্নায়ু টিস্যুর ক্ষতি; ওষুধ বা কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া; অটোইমিউন ও প্রদাহজনিত রোগ; হৃদরোগ; কিডনির সমস্যা; অস্বাস্থ্যকর ডায়েট; অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ; এবং বিষাক্ত পদার্থের সংশ্রব।
চিকিৎসা: ডায়াবেটিস, কেমোথেরাপি, প্রদাহ ও অন্যান্য রোগ থেকে উদ্ভূত নিউরোপ্যাথির চিকিৎসার জন্য একটি নিরাপদ বিকল্প আকুপাংচার ও টিসিএম।
টিসিএম তত্ত্বে মনে করা হয়, পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি শরীরের ক্লেদের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই ক্লেদ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে দেহের মূল শক্তি বা ‘ছি’ ও রক্তের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই আকুপাংচারে শরীরের ক্লেদের কারণ দূর করা এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ‘ছি’ ও রক্তের প্রবাহ মসৃণ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
পুষ্টি টিসিএমের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। একজন টিসিএম চিকিৎসক নিউরোপ্যাথি মোকাবিলায় অবদান রাখতে পারে এমন খাদ্যের তালিকা প্রণয়ন করে দিতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, সবার জন্য তালিকা এক হবে না; রোগীভেদে ভিন্ন হবে। সেকারণেই এক্ষেত্রে টিসিএম বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।