দেহঘড়ি পর্ব-০৩৮
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং টিসিএম ভেষজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ‘ভেষজের গুণ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
অঞ্জনির টিসিএম চিকিৎসা কী?
আপনার চোখের চারপাশে কি কখনো এমন গোটা উঠেছে, যার ফলে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এমন গোটাকে বলা হয় অঞ্জনি। কোথাও কোথাও এটাকে তেলাও বলা হয়। চোখে অনেক ক্ষুদ্র তেল গ্রন্থি আছে; বিশেষ করে চোখের পাতার ওপর। মৃত কোষ, ময়লা বা তেল জমে ওই ছোট ছোট তেল গ্রন্থিগুলোর মুখ বন্ধ হয়ে যায়। তখন ভেতরে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেওয়ায় অঞ্জনি হয়। অঞ্জনি হলে চোখ ফুলে লাল হয়ে যায় এবং পাতা ফেলতে গেলেই ব্যথা লাগে। এমন গোটায় অনেক সময় পুঁজও হয়ে যায়।
প্রাপ্তবয়স্করা অঞ্জনিতে বেশি আক্রান্ত হন। এর দুটি ধরন আছে - বাহ্যিক অঞ্জনি ও অভ্যন্তরীণ অঞ্জনি। এর মধ্যে বাহ্যিক অঞ্জনিই বেশি দেখা যায়। এটি চোখের পাতার বাইরের অংশে হয়। এ ধরনের অঞ্জনির কারণ চোখের পাতার ফলিকলে সংক্রমণ। অভ্যন্তরীণ অঞ্জনি চোখের পাতার ভিতরের অংশে হয়। এ ধরনের অঞ্জনির কারণ চোখের পাতার ভিতরের তেল-উৎপাদনকারী গ্রন্থিতে সংক্রমণ।
টিসিএমে মনে করা হয়, প্লীহা ও পেটে তাপ জমা হয়েছে এমন ব্যক্তির অঞ্জনি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বিশেষ করে অতিরিক্ত মশলাদার, তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার খাওয়ার কারণে এই তাপ জমা হতে পারে। পরিবেশ থেকে শরীরে প্রবেশকারী বহিরাগত বায়ু-তাপের কারণেও এটা হয়; এটা হয় তখন, যখন প্লীহা ও পেটের তাপ সেখানকার মেরিডিয়ানগুলোর মধ্য দিয়ে চোখের পাতায় পৌঁছায় এবং এর ফলে চোখের পাতায় মূল শক্তি বা ‘ছি’ ও রক্ত বাধাগ্রস্ত হয়। এই বাধাগ্রস্ত ‘ছি’ ও রক্ত এবং জমে থাকা তাপ টিস্যুতে প্রদাহ ও পুঁজ সৃষ্টি করে।