দেহঘড়ি পর্ব-০৩৬
প্ল্যাক সোরায়াসিস হলে আক্রান্ত স্থানে লাল বা গোলাপী রঙের পুরু আঁশ জন্মে, যার উপর একটি রূপালী আবরণ থাকে। এই আঁশে খুব চুলকাতে পারে। গুট্টেট সোরায়াসিস হলে ধড়, বাহু বা পায়ে ছোট লাল বা গোলাপী দাগ দেখা দেয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি প্লেকে পরিণত হতে পারে এবং স্ট্রেপ থ্রোটের মতো সংক্রমণ সৃ্ষ্টি করতে পারে।
পাস্টুলার সোরায়াসিস হলে পুঁজে ভরা ফুসকুড়ি হয়, যাতে তীব্র ব্যথা থাকে। এটা দ্রুত পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং জ্বর, মাথাব্যথা ও পেশী দুর্বলতার মতো অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থা হলে চিকিৎসা নিতে হবে। ইনভার্স সোরায়াসিস এমন জায়গায় হয়, যেখানে ত্বকে ভাঁজ পড়ে। যেমন বগল, গোপনাঙ্গের চারপাশ ইত্যাদি।
ইতোমধ্যে কোনও ধরনের সোরায়াসিসে ভুগেছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে এরিথ্রোডার্মিক সোরায়াসিস হয়। এ ধরনের সোরায়াসিসে ত্বক খুব লাল হয়ে যায় এবং পুড়ে গেছে বলে মনে হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিরা খুব অসুস্থ বোধ করে এবং তাদের জ্বর হয় ও হৃদস্পন্দন বাড়ে। এমন সোরায়াসিস হলে অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সোরায়াসিসের প্রচলিত চিকিৎসার লক্ষ্য থাকে ত্বকের কোষের অতিরিক্ত উৎপাদনকে ধীর করা এবং ব্যথা ও চুলকানি থেকে মুক্তি দেওয়া। তবে টিসিএমে এ রোগের মূল কারণ দূর করার ওপর মনোযোগ দেওয়া হয়। টিসিএম অনেক ধরনের ত্বকের রোগ ও অটোইমিউন সমস্যা উপশমে সাহায্য করতে পারে। এ চিকিৎসা ব্যবস্থায় মনে করা হয়, তাপ, বাতাস, ক্লেদ, শুষ্কতা ইত্যাদির মতো মৌলিক কারণগুলোই প্যাথোজেন হিসাবে কাজ করে এবং সেগুলো অতিরিক্ত হলে বা ঘাটতি দেখা দিলে তা শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
টিসিএম তত্ত্ব অনুসারে, সোরায়াসিস অত্যধিক তাপ ও শুষ্কতার প্যাথোজেনিক ফ্যাক্টরগুলোর সাথে সম্পর্কিত। একটি রোগ সৃষ্টিকারী উপাদান হিসাবে তাপ ত্বকে লালভাব ও চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে বাতাস রক্তের শুষ্কতা সৃষ্টি করতে পারে। এই দুটির সংমিশ্রণে রক্তে স্থবিরতা তৈরি হয় এবং তা থেকে সোরায়াসিস সৃষ্টি হতে পারে।