দেহঘড়ি পর্ব-০৩৫
ঊর্ধাঙ্গের অপচয়ের ক্ষেত্রে অত্যধিক তৃষ্ণা দেখা দেয়। এর অন্যান্য সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে থাকে মুখের শুষ্কতা, খিটখিটে মেজাজ, পাতলা হলুদ আবরণসহ জিহ্বা লাল হয়ে যাওয়া এবং হৃদস্পন্দন বাড়া। এ ধরনের ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় কপটিস চাইনিসিস, ওফিওপোগন জাপোনিকাস এবং র্যাডিক্স রেহমাননিয়া দিয়ে তৈরি ক্বাথ ব্যবহার করা হয়।
মধ্যাঞ্চলের অপচয়ের সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ হলো অত্যধিক ক্ষুধামন্দা। এছাড়া নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ, ওজন হ্রাস, ঘন ঘন মুখে ঘা, অত্যধিক তৃষ্ণা, বারে বারে প্রস্রাব হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, হলুদ আবরণযুক্ত লাল জিহ্বা এবং দ্রুত হৃদস্পন্দন। এ ধরনের ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় সাধারণত জিপসাম ফাইব্রোসাম, রাইজোমা অ্যানিমারহেনা এবং গার্ডেনিয়া জেসমিনয়েডস দিয়ে তৈরি ক্বাথ ব্যবহার করা হয়।
নিম্নাঞ্চলের অপচয়ের ক্ষেত্রে প্রস্রাব ঘোলাটে হয়ে যায়। এর অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে থাকে নিম্ন কটিদেশে ব্যথা, হাঁটুর দুর্বলতা, ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, কানে শোঁ শোঁ শব্দ, শুষ্ক ঠোঁট, চুলকানি, কোনও আবরণহীন লাল জিহ্বা এবং দ্রুত হৃদস্পন্দন। কিডনিতে ইয়িনের ঘাটতির কারণে এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়। এ ধরনের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাধারণত, স্কিজ্যান্ড্রা, চাইনিজ ইয়াম, উলফবেরি বা গোজি বেরি দিয়ে তৈরি সিক্স-ফ্লেভার রেহমাননিয়া ব্যবহৃত হয়।
চীনের জ্যেষ্ঠ টিসিএম চিকিত্সক ইউ ইয়ান থাং ইউয়ে বলনে, বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে ডায়াবেটিসের টিসিএম চিকিত্সার প্রধান লক্ষ্য হলো প্লীহাকে শক্তিশালী করা এবং কিডনিকে পুনরুজ্জীবিত করা।
গত কয়েক দশকে পরিচালিত বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল ডায়াবেটিসের চিকিত্সায় পশ্চিমা ওষুধের পরিপূরক হিসাবে টিসিএমের ব্যবহারকে সমর্থন করেছে। পরিপূরক হিসাবে এর ব্যবহার চিকিৎসার কার্যকারিতা বাড়ায় এবং রোগের ঝুঁকি কমায়।
২০১৩ সালে ৮শ’ ডায়াবেটিস রোগীর ওপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়। পরীক্ষায় এক দল রোগীকে ডায়াবেটিসের পশ্চিমা ওষুধ গ্লিবেনক্লামাইড দেওয়া হয় আর অন্য দল রোগীকে গ্লিবেনক্লামাইডের সঙ্গে চীনা ভেষজের একটি যৌগ – সিয়াও খ্য ট্যাবলেট – দেওয়া হয়। ৪৮ সপ্তাহ পর দেখা যায়, সিয়াও খ্য ট্যাবলেট গ্রহণকারীদের হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।