দেহঘড়ি পর্ব-০৩৫
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং টিসিএম ভেষজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ‘ভেষজের গুণ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে টিসিএম
ডায়াবেটিস একটি ব্যাপক বিস্তৃত রোগ। বিশ্বে প্রতি বছর ২০ লাখ মানুষ মারা যায় এ রোগে। অগ্ন্যাশয় যখন পর্যাপ্ত ইনসুলিন উত্পাদন করতে পারে না কিংবা শরীরের কোষগুলো যখন হরমোনের প্রভাবের প্রতি ঠিকমতো সাড়া দিতে পারে না, তখন রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় এবং ডায়াবেটিস হয়। এ রোগের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত তৃষ্ণা, অতিরিক্ত প্রস্রাবের বেগ, ওজন কমে যাওয়া এবং দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া। চিকিত্সা না করা হলে, ডায়াবেটিস কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম, চোখ, কিডনি ও স্নায়ুর ব্যাধিসহ বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
চিরাচরিত চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা বা টিসিএম সুদীর্ঘকাল ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে ডায়াবেটিস ও এর জটিলতা নিয়ন্ত্রণে। খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীর গোড়ার দিকে চীনে সিয়াও-খ্য নামে যে রোগ পাওয়া যায়, সেটি আসলে এখনকার ডায়াবেটিস। সিয়াও-খ্য হলে তৃষ্ণা ও ক্ষুধা বেড়ে যেত, প্রচুর পরিমাণে প্রস্রাব হতো এবং ওজন কমে যেত। তখন বিশ্বাস করা হতো অত্যধিক চর্বিযুক্ত, মিষ্টি বা রিচ ফুড খাওয়ার ফলে এ রোগ হয়।
বর্তমানে টিসিএম চিকিৎসকরা মনে করেন, ডায়াবেটিসের যে প্রধান ৪টি কারণ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, যেটি দেহের ঠান্ডা শক্তি বা ‘ইয়িন’র ক্ষয়ের জন্য দায়ী করে বলে বিশ্বাস করা হয়।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে পশ্চিমা চিকিৎসাব্যবস্থায় রক্তের শর্করার মাত্রার ওপর সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়া হয় এবং সেটা নিয়ন্ত্রণ থাকে প্রধান লক্ষ্য। তবে টিসিএমে আলাদা আলাদা রোগীর মধ্যে দেখা দেওয়া আলাদা আলাদা উপসর্গগুলো উপশমের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই উপসর্গগুলোকে তিনটি প্রধান শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায় - ঊর্ধাঙ্গ, মধ্যাঙ্গ ও নিম্নাঙ্গের অপচয়।