দেহঘড়ি পর্ব-০২৬
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং টিসিএম ভেষজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ‘ভেষজের গুণ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতায় টিসিএম
ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসাব্যবস্থা বা টিসিএমসহ প্রাকৃতিক চিকিৎসাপদ্ধতির অনেকগুলো শাখায় পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্যকে সুস্থতার ভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। পরিপাক প্রক্রিয়াকে পশ্চিমা চিকিৎসাব্যবস্থায় যেভাবে দেখা হয়, টিসিএমে তার থেকে ভিন্নভাবে দেখা হয়। এই প্রাচীন চিকিৎসাপদ্ধতিতে মনে করা হয়, গ্রহণ করা খাবার প্রাথমিকভাবে পাকস্থলীর অঙ্গ-মেরিডিয়ান দ্বারা প্রক্রিয়া করা হয়, যেখানে এটি ভেঙে দরকারী ও বর্জ্য উপাদান – এ দুই ভাগে বিভক্ত হয়। এর মধ্যে দরকারী অংশগুলো প্লীহা অর্গান-মেরিডিয়ান সিস্টেমের উপরের দিকে চলে যায়, যেখানে সেগুলো শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি, মূল শক্তি বা ‘ছি’, রক্ত ও তরলে রূপান্তরিত হয়। অন্যদিকে, বর্জ্যগুলো ক্ষুদ্রান্ত্রে এবং পরে মলের মাধ্যমে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য বৃহদান্ত্রের নীচের দিকে চলে যায়। যদি এই মেরিডিয়ানগুলোতে ভারসাম্য না থাকে তবে আপনি ডায়রিয়া, পেট ফোলা ও পেট ফাঁপার মতো অন্ত্রের সমস্যায় ভুগতে পারেন। যদি আপনার অর্গান সিস্টেমে খুব বেশি তাপ থাকে, তাহলে অন্ত্রের তরল শুকিয়ে যেতে পারে এবং আপনি কোষ্ঠকাঠিন্য অনুভব করতে পারেন। চর্বি ও খাদ্যে থাকা বিষাক্ত পদার্থ ভাঙ্গতে সাহায্য করার মাধ্যমে লিভারও পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতায় অবদান রাখে।
পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতায় খাদ্য ও জীবনধারা-সম্পর্কিত কতগুলো পরামর্শ দেয় টিসিএম। চলুন দেখে নিই সেগুলো:
লেবুজাতীয় ফলের খোসা ব্যবহার করুন: টিসিএমে মনে করা হয়, লেবুজাতীয় ফলের খোসা বদহজমের কারণগুলোকে দূর করে এবং এর মধ্য দিযে পেট ফুলে যাওয়া, ফুসকুড়ি, বমি বমি ভাব, ক্ষুধামন্দার মতো উপসর্গগুলো উপশম হয়। চীনের সুং রাজবংশের সময় থেকে অর্থাৎ প্রায় ১ হাজার বছর ধরে টিসিএমে এ খোসা ব্যবহার করা হয়। ‘ছি’র প্রবাহ বাড়ানোর জন্যও লেবুজাতীয় ফলের খোসা ব্যবহার করা হয় টিসিএমে।