দেহঘড়ি পর্ব-০২৪
টিসিএম তত্ত্ব অনুসারে, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘বি সিন্ড্রোম’ শ্রেণির অধীনে পড়ে। এ শ্রেণির রোগ হয় তখন, যখন শরীরের মেরিডিয়ান পথ দিয়ে জীবনীশক্তি বা ‘ছি’ ও রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। ‘ছি’ বা রক্তের ঘাটতির কারণে শীত, ক্লেদ, বাতাস বা তাপ রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আক্রমণ করে, যার ফলে ‘বি সিনড্রোম’ সৃষ্টি হয়।
টিসিএমে এটাও বিবেচনা করা হয় যে, একটি সমস্যা অভ্যন্তরীণ কারণ থেকে এসেছে নাকি বাহ্যিক কারণ থেকে এসেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আর্থ্রাইটিস একটি অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে হয়, যা জন্মগত। ‘ছি’র ঘাটতি একটি অভ্যন্তরীণ কারণ হতে পারে। নিজেদের সহজাত অবস্থার জন্য কিছু লোকের এই কারণগুলোর দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বাতের দুই ধরনের প্যাটার্ন আছে -- ঠাণ্ডা প্যাটার্ন ও তাপ প্যাটার্ন। ঠান্ডা প্যাটার্নের বাত তখন হয়, যখন বাইরের উৎস থেকে আসা ঠান্ডা অস্থিসন্ধিকে কঠিন করে দেয়। এমন হলে রক্ত সঞ্চালন কমে যায় এবং ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যায়। এই কারণে টিসিএম চিকিৎসকরা দীর্ঘ সময় ধরে ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় না থাকার পরামর্শ দেন।
হিট প্যাটার্নের বাত হলে অস্থিসন্ধিগুলো লাল হয়ে যায়, ফুলে ওঠে এবং মুখ রক্তাভ হয়।। আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা কারণ ও লক্ষণের ভিত্তিকে আলাদা হয়। একজন টিসিএম চিকিৎসক রোগীর অবস্থা বিশ্লেষণ করে চিকিৎসা পদ্ধতি ঠিক করে দেন।
তেতাল্লিশটি ক্লিনিকাল গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, টিসিএম কেবল বাতের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে না, এটি রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতাও বাড়ায়।
চীনের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন অনুমোদিত রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও হাঁটুর অস্টিওআর্থারাইটিসের প্রধান টিসিএম ওষুধ হলো ‘বি-ছি’ ক্যাপসুল। এ ক্যাপসুলের মূল উপাদান হলো রেড সেইজ, সেমেন স্ট্রাইচনি, চীনা যষ্ঠিমধু, কডোনপসিস পিলোসুলা, অ্যাস্ট্রাগুলাস মংহোলিকাস, বাঞ্জ ও নটোজিংসেন। এতে আরও থাকে তানশিনোন আইআইএ সালফোনিক সোডিয়াম, সালভিয়েনোলিক অ্যাসিড বি, গ্লাইসাইরিজিন, ব্রুসিন, স্ট্রাইকাইন, ক্রিপ্টোটানশিনোন ও লিকুইরিটিন।