দেহঘড়ি পর্ব-০২৪
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং টিসিএম ভেষজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ‘ভেষজের গুণ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
বাতের চিকিৎসায় টিসিএম
সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আপনার শরীরে কি অসাড়তা বোধ হয়? দাঁড়ালে কি হাঁটুতে ব্যথা অনুভব করেন? হাত, পা ও আঙ্গুলে ব্যাথা লাগে? কিংবা পিঠের নীচের অংশে ব্যথা অনুভব করেন, যা ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে? এসব লক্ষণ থাকলে, আপনি সম্ভবত আর্থ্রাইটিস বা বাতে আক্রান্ত। ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি বা টিসিএম ও আকুপাংচার কেবল আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ও প্রদাহ উপশম করতে সাহায্য করে না; বরং এটি আপনাকে চলাফেরার স্বাধীনতা ফিরে পেতে এবং বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।
আর্থ্রাইটিস হলে অস্থিসন্ধি ফুলে যায় এবং ব্যথা অনুভূত হয়। এটি ব্যাপক বিস্তৃত একটি রোগ। সব বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে, তবে বয়স্ক মানুষের মধ্যে এ রোগের হার বেশি। এ রোগ তীব্র হলে মানুষ কর্মে অক্ষম হয়ে পড়ে। আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষই ব্যথার ওষুধ গ্রহণ করে এবং অস্বস্তি নিয়ে জীবনযাপন করে।
প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় মূলত ব্যথানাশক বা এনএসএআইডি দিয়ে ব্যথা উপশম ও প্রদাহ কমানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে এই ওষুধগুলো ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা বা মানুষের চলফেরার সক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট নয়। পাশাপাশি ওষুধগুলোর অনেকগুলি অবাঞ্ছিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে।
বাতের ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এ রোগের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী অস্থিসন্ধিতে তরুণাস্থি ছিড়ে ছিড়ে এর পরিমাণ কমে যাওয়া। আঘাতের কারণেও তরুণাস্থির ক্ষতি হতে পারে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা লুপাসের মতো রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী রোগের কারণে ইমিউন সিস্টেম সাইনোভিয়াম টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ টিস্যুগুলো সাইনোভিয়াল তরল তৈরি করে, যা জয়েন্টগুলোকে তৈলাক্ত রাখে। বিজ্ঞান এখনো রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের সঠিক কারণ আবিষ্কার করতে পারেনি, তবে এটি কিছুটা বংশগত হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সংক্রমণ হলে তার প্রতি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা যে প্রতিক্রিয়া দেখায়, সেটাও অস্থিসন্ধিতে ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে। একে বলা হয় প্রতিক্রিয়াশীল আর্থ্রাইটিস। অতিরিক্ত ওজন বাতে অবদান রাখে। কারণ অতিরিক্ত ওজন অস্থিসন্ধিতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে।