দেহঘড়ি পর্ব-০২২
হিট স্ট্রোকের বেশ কতগুলো লক্ষণ আছে। এগুলো হলো দেহে অতি উচ্চ তাপমাত্রা, শুষ্ক ত্বক বা কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রচুর ঘাম, বিভ্রান্তি, খিঁচুনি, কথায় জড়তা, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ও চেতনা হ্রাস। ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা বা টিসিএমে মনে করা হয়, হিট স্ট্রোক হলো তাপ ও ক্লেদের কারণে প্রাণশক্তি বা ‘ছি’ এবং ‘ছি’র ঠান্ডাশক্তি ‘ইয়িন’র ক্ষতির ফল।
সিঙ্গাপুরের রিয়েল হেলথ মেডিকেলের জ্যেষ্ঠ টিসিএম চিকিৎসক ব্র্যান্ডন ইয়ুউ মনে করেন, দীর্ঘ সময় আর্দ্রতা বা উচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে থাকলে শরীরে তাপ ও ক্লেদ বাড়তে পারে। বায়ু চলাচল কম এমন পরিবেশে মোটা বা আঁটসাঁট পোশাক পরাও হিট স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। একজন ব্যক্তি প্রচুর পরিমাণে ঘামলে তার শরীরের ‘ছি’ ও ‘ইয়িন’-এ নিয়ন্ত্রণ আসে, যার ফলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
হিট স্ট্রোকে হলে কী করবেন?
কোন ব্যক্তি যদি তীব্র সূর্যালোক বা গরম পরিবেশের মধ্যে পড়ন, তবে অবিলম্বে তাকে একটি একটি শীতল ও ছায়াযুক্ত জায়গায় নিন এবং পোশাকের বাইরের অংশটি সরিয়ে ফেলুন।
এর পর শরীর পানি ঢালুন। শীতলায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে তার চারপাশে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করুন। যদি সম্ভব হয় তাহলে মাথা, বগল, ঘাড় ও কুঁচকির অংশে বরফের টুকরো রাখুন।
হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এরপর যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যান। মনে রাখতে হবে, শরীরের তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে না আসা পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি নজর রাখতে হবে।
হিট স্ট্রোকের চিকিৎসা কী?
চিকিৎসক ব্র্যান্ডন ইয়ুউ মনে করেন, হিট স্ট্রোকের চিকিৎসায় সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায় ক্লিনিকাল চিকিৎসা এবং ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা ব্যবস্থার সংমিশ্রণে চিকিৎসা দেওয়া গেলে। টিসিএম চিকিৎসায় ভেষজ ফরমুলেশনগুলোর প্রধান লক্ষ্য থাকে হিট স্ট্রোক-পরবর্তী জটিলতাগুলো উপশম করা। চিকিৎসক ব্র্যান্ডন সতর্ক করে দেন যে, ক্লিনিকাল স্বাস্থ্যসেবা এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত টিসিএম চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ওষুধ নির্বাচন করলে বা নিজে নিজের চিকিৎসা নিলে ফলাফল উল্টো হতে পারে।