দেহঘড়ি পর্ব-০১৪
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং আগুনে দগ্ধ হলে করণীয় কী সে সম্পর্কে একটি বিশেষ আলোচনা।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
পরিপাকতন্ত্র ঠিক রাখতে টিসিএম
একটি সুস্থ পরিপাকতন্ত্র শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বের কারণে অন্ত্রকে ‘দ্বিতীয় মস্তিষ্ক’ হিসাবে গণ্য করা হয়। অন্ত্রে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা হরমোন তৈরি করে, বর্জ্য পরিষ্কার করে, কোষে পুষ্টি যোগায় করে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সাহায্য করে।
একটি ভারসাম্যহীন অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম কেবল অন্ত্রের স্বাস্থ্যের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না বরং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ ও অঙ্গ ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করে। এটি ত্বকের ফুসকুড়ি, ওজন বৃদ্ধি, বিষণ্নতা, মানসিক চাপ, ফোলাভাব, অ্যালার্জি, অ্যাসিড প্রতিবাহ, ক্লান্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য ঘটাতে পারে।
ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসাব্যবস্থা বা টিসিএমে পরিপাকতন্ত্রকে শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে বিবেচনা করা হয় এর খাদ্য ভাঙ্গার, পুষ্টি শোষণ করার, কোষে পুষ্টি যোগানোর এবং বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার করার ক্ষমতার কারণে। টিসিএমে মনে করা হয়, বদহজম হয় পেটে খাবার জমা হওয়ার কারণে। অনুপযুক্ত খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত খাওয়া এবং দুর্বল পরিপাকতন্ত্রের কারণে বদহজম হতে পারে।
সকালে বেশি, রাতে কম খান
টিসিএমে বিশ্বাস করা হয়, সকাল ৭ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত পেট ও প্লীহা সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। তাই এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খাবার খাওয়া উচিত। একটি পূর্ণ প্রাতঃরাশ গ্রহণ করুন, দুপুরে তার চেয়ে কম খান এবং রাতে আরও কম খান। গভীর রাতে খাবার খেলে তাতে শরীরে অধিক শক্তি প্রবেশ করে এবং পরিপাকতন্ত্রের উপর চাপ তৈরি হয়। এ কারণে সহজেই স্থূলতা ও বদহজম হতে পারে। এছাড়া পরিপাকতন্ত্র দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে পুষ্টি সঠিকভাবে শোষিত হতে পারে না, যার জন্য বমি, ক্ষুধামন্দা ও ডায়রিয়া হতে পারে।