দেহঘড়ি পর্ব-০১২
ডায়েটও হাঁপানি বাড়িতে দিতে পারে। কাঁচা ও ঠান্ডা খাবার প্লীহাকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে এবং তরল চলাচলে বিঘ্ন ঘটিয়ে কফের উৎপাদন বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে। ভারী, মিষ্টি ও চর্বিযুক্ত খাবার শরীরে কফ ও তাপ সৃষ্টি করে। মাছ, কাঁকড়া, শেলফিশ ও অন্যান্য সামুদ্রিক খাবারগুলোও হাঁপানির আক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ায়।
জন্মগত দুর্বলতা ও দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতাও হাঁপানির অন্যতম কারণ। হাঁপানিতে আক্রান্ত শিশুদের সাধারণত জন্মগতভাবে কিডনিতে ‘ছি’র ঘাটতি থাকে। অন্যদিকে, দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা, যেমন দীর্ঘস্থায়ী কাশি এবং বারবার সর্দি বা ফ্লুতে আক্রান্ত রোগীদের ফুসফুসের ‘ছি’র ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ঠাণ্ডার কারণে যখন হাঁপানি হয়, তখন এমন টিসিএম ভেষজ ফর্মুলেশন বেছে নেওয়া হয়, যা ঠান্ডা দূর করে, শরীরের অভ্যন্তরকে উষ্ণ করে, কফ দূর করে এবং ব্রঙ্কিয়াল খিঁচুনি উপশম করে। এ ফর্মুলেশনের মধ্যে থাকে এফেড্রে নামের এক ধরনের পাতাহীন গুল্ম, দারুচিনি, সরিষার বীজ, আসারাম, শুকনো আদা, ম্যাগনোলিয়ার ছাল, এপ্রিকট বীজ, লেপিডিয়াম, পিনেলিয়া, স্কিজান্দ্রা, লুমব্রিকাস, সাদা পেওনি ও যষ্টিমধু।
এফেড্রে ও দারুচিনি কুঁচি ঠান্ডা দূর করে, শ্বাসকষ্ট কমায় এবং ফুসফুসের ‘ছি’ প্রবাহকে মসৃণ করে। এর পাশাপাশি এফেড্রে প্রস্রাব বাড়ায়, যার মধ্য দিয়ে ফুসফুসে জমা তরল দূর হয়। সরিষার বীজ, আসারাম ও শুকনো আদা ফুসফুসকে উষ্ণ করে, জমে যাওয়া তরল দ্রবীভূত করে এবং ফুসফুসকে তার স্বাভাবিক কাজ শুরু করতে সহায়তা করে। ম্যাগনোলিয়া ছাল ফুসফুসের ‘ছি’ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এপ্রিকট বীজ, লেপিডিয়াম ও পিনেলিয়া কফ দূর করে, জমাট তরল গলায় এবং শ্বাসকষ্ট কমায়। স্কিজান্দ্রা ‘ছি’র লিকেজ প্রতিরোধের মাধ্যমে ফুসফুসকে রক্ষা করে। লুমব্রিকাস শ্বাসকষ্ট দূর করে এবং ব্রঙ্কি প্রসারিত করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে সাদা পেওনি ব্রঙ্কির পেশীর খিঁচুনি দূর করে, ভাজা যষ্টিমধু ‘ছি’র ঘাটতি পূরণ করে, কাশি বন্ধ করে, খিঁচুনি কমায় এবং ব্যথা উপশম করে।