দেহঘড়ি পর্ব-০১০
হেপাটাইটিস-বি বা হেপাটাইটিস-সি’র উপসর্গ সংক্রমণের কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস বা কোনও কোনও ক্ষেত্রে কয়েক বছরেও দেখা না দিতে পারে। কোনও কোনও মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা হেপাটাইটিসের কোনও লক্ষণ অনুভব করেনা। সবচেয়ে সাধারণ হেপাটাইটিস উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে:
• পেটের ডান দিকে ব্যথা অনুভব করা
• লিভার এলাকায় ফুলে যাওয়া, পেট ফুলে যাওয়াএবং লিভারে তরল জমা হওয়া
• জন্ডিস হওয়া এবং চোখ ও ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া
• প্রস্রাব গাঢ় ও কালো হওয়া
• মলের রঙ হালকা হয়ে যাওয়া কিংবা মাটির রঙ ধারণ করা
• ক্লান্তি অনুভব করা
• বমি বমি ভাব হওয়া
• শরীরে জ্বর থাকা
• ক্ষুধামন্দা দেখা দেওয়া
• অস্থিসন্ধিতে ব্যথা অনুভূত হওয়া
• সহজেই রক্তপাত হওয়া বা সহজেই ক্ষত হওয়া হেপাটাইটিসসি’র সম্ভাব্য উপসর্গ। ত্বকে ফুসকুড়ি বা চুলকানি, সামান্য ফোসকা, বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের চুলকানিও হেপাটাইটিস সি’র লক্ষণ।
টিসিএম ব্যবস্থায় হেপাটাইটিসের উপসর্গ:
ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা বা টিসিএমে মনে করা হয়, অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলো লিভারের সঙ্গে একত্রে কাজ করে। এবং এর মধ্য দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করতে এবং তা শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে দিতে লিভারকে সাহায্য করে। তবে লিভার বা এসব সাহায্যকারী অঙ্গে মূল শক্তি বা ‘ছি’ কিংবা এর উষ্ণশক্তি ইয়াং অথবা ঠান্ডাশক্তি ইয়িনে কোনও ভারসাম্যহীনতা তৈরি হলে হেপাটাইটিস হতে পারে।
লিভারের ‘ছি’য়ের স্থবিরতার কারণে হেপাটাইটিস হলে বমি বমি ভাব হয়, ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়, পেট ফুলে যায়। প্লীহা বা কিডনিতে ইয়াংয়ের ঘাটতিজনিত কারণে হেপাটাইটিস হলে ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়, মল আলগা ও বর্ণহীন হয়ে যায়, দুর্বলতা অনুভূত হয় এবং বেশি হারে পেশী নষ্ট হয়। লিভার ও পিত্তথলিতে ক্লেদ ও তাপ জমার কারণে এ রোগ হলে জন্ডিস দেখা দেয়, চোখ ও ত্বক হলুদ হয়ে যায়, জ্বর আসে এবং বমি বমি ভাব অনুভূত হয়। লিভার ও কিডনিতে ইয়িন ঘাটতিজনিত কারণে হেপাটাইটিস হলে মাথা ব্যথা হয়, মাথা ঘোরে, নারীদের ঋতুচক্রে অনিয়ম দেখা দেয়, অস্থিসন্ধি শক্ত হয়ে যায়, ঘুম বিঘ্নিত হয় এবং কানে রিং বাজার মতো শব্দ হয়।