দেহঘড়ি পর্ব-৮৪
আজ আমরা বিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথা এবং তাদের কারণগুলো বিশ্লেষণ করব, কীভাবে আকুপাংচার এবং টিসিএম দিয়ে তাদের চিকিৎসা করা যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করব, এ চিকিৎসার কার্যকারিতার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দেখাবো এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে কীভাবে আপনি মাথাব্যথা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন সে সম্পর্কিত কিছু পরামর্শ দেবো।
আকুপাংচারের মাধ্যমে মাথাব্যাথা চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে মাথাব্যথাকে তাদের অবস্থান অনুসারে শ্রেণীভুক্ত করা হয়। ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসাপদ্ধতি মতে, মাথাব্যথা ৭ ধরনের হয়। আকুপ্রেসার এ ৭ ধরনের ব্যথাই উপশমে সাহায্য করতে পারে।
আকুপাংচার পয়েন্ট এবং অন্যান্য চিকিৎসার কৌশলগুলো কী হবে তা নির্ধারণে যেসব বিষয় বিবেচনা করা হয় সেগুলো হলো কিসের কারণে মাথাব্যথা শুরু হয়; মাথাব্যথার অবস্থান, ফ্রিকোয়েন্সি বা পৌনঃপুন্য ও তীব্রতা; ব্যথার মান; দিনের কোন সময় ব্যথা হয়, কিসে মাথাব্যথা কমে এবং কিসে তা বাড়ে। এ প্রশ্নগুলোর উত্তর টিসিএম বিশেষজ্ঞদের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে যে মাথাব্যাথা কি আবেগ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, মাসিক ঋতুচক্র, ঘুমের অভাব বা পুষ্টির অভাবের মতো অভ্যন্তরীণ কারণগুলো থেকে উদ্ভূত; নাকি পরিবেশের দূষিত পদার্থ, বালিশের কারণে ঘাড় বা চোয়ালের টানের মতো বাহ্যিক কারণগুলো থেকে উদ্ভুত। মাথা ও ঘাড়ের পিছনের অক্সিপিটাল স্নায়ুগুলোর ওপর বেশি চাপ পড়লে অক্সিপিটাল মাথাব্যথা হয়। কয়েকটি কারণ এক সঙ্গে মিলেও মাথাব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে টিসিএম চিকিৎসকরা সবগুলো কারণ বিশ্লেষণ করে চিকিৎসা ব্যবস্থা নির্ধারণ করেন এবং আকুপাংচার চিকিৎসার জন্য পয়েন্টগুলো বেছে নেন। যেমন অনেক মাইগ্রেনের মাথাব্যথা লিভারের সঙ্গে যুক্ত। তাই সেক্ষেত্রে লিভারে ‘ইয়াং’ বা উষ্ণ শক্তি উপশম করার জন্য নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলো বেছে নেওয়া যেতে পারে। উদ্বেগজনিত মাথাব্যথা ঘাড় ও কাঁধের উত্তেজনার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। তাই আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ সেই জায়গাগুলোতে বাধা মুক্ত করার জন্য কাজ করেন। সাধারণত, রোগীদের আট সপ্তাহ যাবৎ প্রতি সপ্তাহে দুটি চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করা হয়।