দেহঘড়ি পর্ব-৬৩
আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে এইচআইভি ছড়ায়?
স্পর্শ, চোখের জল, ঘাম, লালা বা প্রস্রাবের মাধ্যমে এইচআইভি ছড়ায় না। সেকারণে একই বাতাসে শ্বাস নেওয়া, একই টয়লেট সিট বা দরজার হাতল স্পর্শ করা, একই পানির ফোয়ারা থেকে পান করা, আলিঙ্গন করা, চুম্বন বা করমর্দন করা, একই পাত্রে খাওয়া কিংবা একই জিম ব্যবহার করার মাধ্যমে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কেবলমাত্র সংক্রামিত ব্যক্তির রক্ত, বীর্য, ভ্যাজাইনাল ফ্লুইড বা বুকের দুধ থেকে এটা ছড়াতে পারে।
মশার মাধ্যমে কি ছড়ায় এইচআইভি?
যেহেতু ভাইরাসটি রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়, অনেকে মনে করেন মশা বা অন্য রক্তচোষা পোকামাকড়ের মাধ্যমে তারা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে বেশ কিছু গবেষণা দেখা গেছে, প্রচুর মশা ও এইচআইভি রোগী আছে এমন জায়গায়ও মশার মাধ্যমে এইচআইভি ছড়ায় না। রক্তচোষা পোকামাকড় যখন কাউকে কামড় দেয়, তখন তারা আগে কামড় দেওয়া ব্যক্তি বা প্রাণীর রক্ত দ্বিতীয় ব্যক্তির রক্তে ঢুকিয়ে দেয় না। তাছাড়াও, এইচআইভি ভাইরাস এসব পোকামাকড়ের ভিতরে খুব অল্প সময় বেঁচে থাকে।
ওষুধ খেলে কি আর ভয়ের কারণ নেই?
অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ড্রাগ বা এআরটি অনেক এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের জীবনকে দীর্ঘায়িত হতে সাহায্য করে। তবে এর মধ্যে অনেক ওষুধই ব্যয়বহুল এবং অনেকগুলোর মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এইচআইভি সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না। এছাড়া এইচআইভির ড্রাগ-প্রতিরোধী ধরনগুলো চিকিৎসাকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে। একটি আজীবনের রোগ এবং তা থেকে সৃষ্ট সমস্যাগুলো নিয়ে বাঁচার চেয়ে প্রতিরোধ সহজ ও কম ব্যয়সাপেক্ষ৷
এইচআইভি পজিটিভ মানেই কি জীবন শেষ?
প্রারম্ভিক বছরগুলোতে, যখন এই রোগটি মহামারী আকার ধারণ করেছিল, তখন এইডসে মৃত্যুর হার ছিল অনেক বেশি। কিন্তু এখনকার ওষুধগুলো এইচআইভি বা এমনকি এইডস আছে এমন লোকেদের স্বাভাবিক ও উৎপাদনশীল জীবনযাপন দীর্ঘায়িত হতে সাহায্য করে। একজন এইচআইভিতে সংক্রমিত ব্যক্তি যদি দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করেন এবং সঠিকভাবে ওষুধ গ্রহণ করেন, তবে এটি সম্ভব যে তার শরীরে এই ভাইরাস কখনই এইডসে বিকশিত হবে না। এবং ভাইরাসে আক্রান্ত না হলে ওই ব্যক্তি যতদিন বেঁচে থাকতেন, ততদিনই বেঁচে থাকতে পারবেন। এইচআইভি ক্যান্সার, হৃদরোগ ও কিডনি রোগের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই সুস্থ জীবনযাপনের মাধ্যমে নিজেকে রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।