চীন-আফ্রিকা সহযোগিতার নিদর্শন:উগান্ডার কারুমা পানিবিদ্যুতকেন্দ্র
২০১৫ সালে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের জোহানেসবার্গ শীর্ষসম্মেলনে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন-আফ্রিকা নতুন কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত করার কথা বলেছিলেন। এর পর চীন আফ্রিকার সঙ্গে শিল্পায়ন, কৃষির আধুনিকায়ন, অবকাঠামো, ব্যাংকিং, সবুজায়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, দারিদ্র্যবিমোচন, গণস্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়। চীন-আফ্রিকা সহযোগিতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উগান্ডার কারুমা পানিবিদ্যুতকেন্দ্র।
উগান্ডার উত্তরাঞ্চলে চীনা বিশেষজ্ঞরা স্থানীয় কর্মীদের সহায়তায় বাস্তবায়ন করেন দেশটির বৃহত্তম প্রকল্প 'কারুমা পানিবিদ্যুতকেন্দ্র'। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ১৫ শতাংশ বহন করে উগান্ডার সরকার এবং বাকি ৮৫ শতাংশ ঋণ দেয় চীন। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাজ শেষ হবে চলতি বছরের শেষ দিকে। এটি পূর্ব আফ্রিকার বৃহত্তম পানিবিদ্যুতকেন্দ্র।
মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহারের দিক দিয়ে উগান্ডা বিশ্বের সবচেয়ে নিচের দিকের একটি দেশ। দেশটির শহুরে বাসিন্দাদের মাত্র ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের আওতায় আছেন। আর গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মাত্র ৬ শতাংশ বিদ্যুত ব্যবহার করার সুযোগ পান। বিদ্যুত কেনার মতো সামর্থ্য উগান্ডার অধিকাংশ মানুষের নেই। তবে দেশটিতে সহজে পানিবিদ্যুত উত্পাদনের মতো প্রাকৃতিক পরিবেশ আছে। কারুমা প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার দেং ছাং ই বলেন, উগান্ডার সংশ্লিষ্ট নদীতে পানির প্রবাহ স্থিতিশীল। বছরের সবসময় এই নদীতে যথেষ্ট পানি থাকে; থাকে পানির প্রবাহ। তিনি বলেন, "দু'দেশের নেতৃবৃন্দ যৌথভাবে কারুমা প্রকল্প হাতে নেন। প্রকল্পটি উগান্ডাকে সমৃদ্ধ ও উন্নত করার শত বছরের স্বপ্ন পূরণের বাহন হতে পারে। এটি উগান্ডার 'উন্নয়ন পরিকল্পনা, ২০৪০'-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারুমা পানিবিদ্যুতকেন্দ্র স্থিতিশীলভাবে বিদ্যুত সরবরাহ করতে পারবে। বিদ্যুতের দামও পড়বে কম। এই একটি কেন্দ্রের মাধ্যমে উগান্ডার বিদ্যুত-উত্পদানক্ষমতা দ্বিগুণ হবে। এ থেকে উগান্ডার সরকার প্রতিবছর ২০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করবে। এটি হবে সেদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার অন্যতম হাতিয়ার এবং দেশটির শিল্পায়ন ও টেকসই উন্নয়নের জন্য সহায়ক। উগান্ডা এর মাধ্যমে মধ্যম-আয়ের দেশে উন্নীত হতে পারো।"