বিশ্বের চোখে চীনের অর্থনৈতিক উদ্ভাবনী শক্তি
‘উদ্ভাবন হলো চীনের একটি মহান দেশ হওয়ারর মূল কারণ’, ‘চীন হল পশ্চিমা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণা ও উন্নয়নের পরীক্ষাগার’, ‘চীন অনুকরণ থেকে অতিক্রম করছে’... সাম্প্রতিক সময় ‘উদ্ভাবন’ অনেক বিদেশি গণমাধ্যমের কাছে চীনের অর্থনীতি নিয়ে একটি আলোচিত শব্দ হয়ে উঠেছে।
অর্থনৈতিক ‘অর্ধ-বার্ষিক প্রতিবেদনের’ তথ্য থেকে চীনের অর্থনীতির উদ্ভাবনের চালিকা শক্তি দেখা যায়।
চলতি বছরের প্রথমার্ধে, উচ্চ-প্রযুক্তি উত্পাদন শিল্পের অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারিত আকারের উপরে শিল্পের অতিরিক্ত মূল্যের ১৫.৮ শতাংশ, যা প্রথম ত্রৈমাসিক থেকে ০.৬ শতাংশ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে; ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, সার্ভিস রোবট, নতুন শক্তির যান এবং সৌর কোষসহ বুদ্ধিমান সবুজ নতুন পণ্য সবার নজর কেড়েছে এবং উত্পাদনের পরিমাণ দুই-অঙ্কের বৃদ্ধি বজায় রেখে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা তাস জানায়, ‘চীনের হাইটেক উৎপাদন শিল্পে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। উচ্চ প্রযুক্তির ক্ষেত্রগুলোর উন্নয়ন হলো অর্থনৈতিক মানের স্তরের উন্নতির সবচেয়ে জোরালো প্রকাশ।’
ব্লুমবার্গ তাদের এক বিশ্লেষণে ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে, চীনের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) উচ্চ-প্রযুক্তি শিল্পের অনুপাত ২০১৮ সালে ১১ শতাংশ থেকে ২০২৬ সালের ১৯ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে। নতুন শক্তির যানবাহন, লিথিয়াম ব্যাটারি এবং ফটোভোলটাইকসহ এ ‘তিনটি নতুন পণ্য’ যুক্ত করলে এই অনুপাত ২০২৬ সালে ২৩ শতাংশে প্রসারিত হবে।
সম্প্রতি অ্যাপলের প্রধান অপারেটিং অফিসার বা সিওও জেফ উইলিয়ামস সম্প্রতি চীনের শেনচেন শহরে পরিদর্শনকালে দেখেছেন যে, একসময় ম্যানুয়ালি পরিচালিত উত্পাদন লাইন এখন একটি ‘মানবহীন কারখানা’তে পরিণত হয়েছে, স্বয়ংক্রিয় নির্দেশিত যানবাহন এবং মোবাইল রোবটে চলছে সব কাজ। তিনি প্রশংসা করে বলেন, ‘গত ত্রিশ বছরের মধ্যে চীন প্রাথমিক উত্পাদন থেকে এখন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় উত্পাদন প্রযুক্তি আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছে, যা আমাকে ভীষণ অবাক করেছে। জাতিসংঘের প্রাক্তন উপ-মহাসচিব এরিক সোলহেইম, যিনি চীনের দশটিরও বেশি প্রদেশে ভ্রমণ করেছেন, বলেছেন যে, এক একটি প্রাণবন্ত কেস তাকে দেখায় যে, ডিজিটালাইজেশন এবং বুদ্ধিমত্তা দ্বারা চালিত একটি শিল্প আপগ্রেড হচ্ছে। চীন তার অতীত সাফল্যের উপর নির্ভর করে না, বরং ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকে এবং তার জনগণের উপকার করার জন্য উত্পাদনশীলতার বিকাশ অব্যাহত রাখে। এটি এই শতাব্দীতে চীনের সাফল্যের চাবিকাঠি হবে।