ওয়াং লিয়াং হোং: বুই জাতির ‘এমব্রয়ডারি ম্যান’
‘সূচিকর্মে’র কথা উল্লেখ করতে গেলে প্রায়শই আমাদের মনে যা ভেসে আসে তা হল ‘সুচিকর্ম মহিলা’র ছবি, যিনি চটপটে এবং স্মার্ট। আপনি কখনও ভাবতে পারেন, একজন তরুণ সূক্ষ্ম সূঁচের কাজটিতে খুব সুদক্ষ। আজকের অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে একসঙ্গে ওয়াং লিয়াং হোং নামে চীনের বুই জাতির একজন তরুণের গল্প শুনবো।
আশেপাশের লোকেরা ওয়াং লিয়াং হোংকে ‘এমব্রয়ডারি ম্যান’ বলে ডাকেন। তিনি কুই চৌ প্রদেশের আনশুন শহরের কুয়াং লিং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। এখন বুই জাতির পোশাকের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী তিনি। ওয়াংয়ের বেশিরভাগ সহপাঠী স্নাতক শেষ করার পরে শহরেই থেকে যান। কিন্তু পাহাড় ছেড়ে শহরে যাওয়া ওয়াং লিয়াংহোং ঐতিহ্যিক সূচিকর্ম শিল্পে আত্মনিয়োগের জন্য বিনা দ্বিধায় আবার পাহাড়ে ফিরে আসেন।
রোজ রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ছোট্ট গ্রামটি ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে ওঠে, শুধু একটি বাতি জ্বলে ওঠে। আলোর নিচে, রূপালী সূঁচ এবং সূচিকর্মের সুতোগুলো উপরে এবং নীচে উড়ছে এবং ওয়াং লিয়াংহোং নামের এই যুবকের আঙুলের মধ্যে ছন্দময়তায় আসা যাওয়া করছে। তিনি মোবাইল ফোনে সহজ ভাষায় লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে তার সূঁচিকর্মের দক্ষতা প্রচার করেন, ফলে বুই জাতির পোশাক ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানাশোনা বাড়ে লাখ লাখ মানুষের।
ওয়াং লিয়াংহোং এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন এবং একজন ‘এমব্রয়ডারি ম্যান’ হিসেবে সাত বছরেরও বেশি সময় পার করেছেন। তার জন্য সূচিকর্ম একটি পেশা, আবেগ এবং জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ওয়াং লিয়াংহোং একটি সূচিকর্ম দেখিয়ে বলেন, ‘আপনি দেখুন, আমি এখন যে জায়গাটিতে এমব্রয়ডারি করছি, এটি একটি প্রজাপতির শুঁড়, রোলিং সেলাই পদ্ধতি ব্যবহার করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রজাপতি প্যাটার্নটিও বেশ আকর্ষণীয়। আমরা বুই জাতির লোকেরা প্রজাপতিকে সুন্দর জিনিসের প্রতীকের সাথে তুলনা করি এবং মনে করি প্রজাপতি আমাদের বোন। আমার বোনেরা ফুলের মতো, খুব সুন্দর, যার মানে আমাদের জীবনও ফুলের মতো হবে, বিশেষ করে সুন্দর এবং সুখী।’