চীনে অধ্যয়নরত রাশিয়ান শিক্ষার্থী অ্যালেক্সান্দারের গল্প
“একদিন, আমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করি, তারা আমাকে একটি চাইনিজ নাম দিতে পারে কি না। তারা এটি সম্পর্কে অনেকদিন ধরে চিন্তা করেন তবে খুব ভালো ধারণায় উপনীত হতে পারে না। তখন হঠাৎ আমার মনে আসে ‘ব্রিকস’। এটি পাঁচ দেশের ইংরেজি নামের আদ্যাক্ষর নিয়ে তৈরি। তারপর আমি তাদেরকে বলি, তাহলে তোমাদের নাম থেকে একটি করে শব্দ নিয়ে তো আমার নাম তৈরি করা যায়। এভাবে আমার নাম হয় ওয়াং ইছেন। আমরা এখনও খুব ভালো বন্ধু এবং প্রায়ই একসাথে ভ্রমণ করি।”
২০১৮ সালে চীনা বন্ধুরা অ্যালেক্সান্দারকে বসন্ত উৎসবের জন্য শাংহাইয়ে আমন্ত্রণ জানান। অ্যালেক্সান্দার প্রথমবারের মতো চীনের ভূমি স্পর্শ করেন। সে সময়েই চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়।
“আমি যখন শাংহাই পৌঁছাই তখন আমি খুব অবাক হই। কারণ শাংহাই আমার চোখে ভবিষ্যতের একটি শহর। সেখানকার উন্নয়ন খুব দ্রুতগতির এবং খুব শক্তিশালী। শাংহাইয়ের স্থাপত্যগুলো দেখতে দেখতে আমি উপলব্ধি করি, টিভি অনুষ্ঠান ও চলচ্চিত্র থেকে চীনা জনগণের জীবন সম্পর্কে আমরা যা জেনেছি, তা অনেক পেছনের এবং সময়ের সাথে সেটা তাল মিলিয়ে চলেনি।”
শাংহাইয়ের ওই সফরের সময়ই অ্যালেক্সান্দার গভীরভাবে ভাবতে শুরু করেন - প্রকৃত চীন কেমন? এমন চিন্তা সামনে রেখে তিনি উত্তর খুঁজতে থাকেন। তিনি বলেন,
“পরে আমি একটি স্কুলে ইন্টার্নশিপের জন্য সেন্ট পিটার্সবার্গে ফিরে আসি। সেখানে আমি সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উন্মুক্ত ক্লাস নিই। বিষয় ছিল ‘আমার চোখে চীনের চিত্র’। আমি চীনা সংস্কৃতি ও জীবন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অনেক প্রশ্ন করি এবং আমি বুঝতে পারি, চীন সম্পর্কে তাদের জানাশোনা খুব কম এবং কোনও কোনও শিক্ষার্থী চীন সম্পর্কে একেবারে জানেই না। আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শাংহাই ও ছেংতুতে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করি; চীনের দৃশ্য ও জীবনের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দিই; চীনে ভ্রমণের সময় আমার নিজের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতাও বর্ণনা করি এবং আমার তোলা অনেক ছবি ও ভিডিও দেখাই। শিক্ষার্থীরা সেগুলোর প্রতি খুব আগ্রহ দেখায়। ক্লাসের পরে কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার সাথে চীনে পড়াশোনা এবং চীন ভ্রমণ নিয়ে আলোচনা করে।”