বিদেশিরা কেন চীনে আসতে চান?
বর্তমানে চীনের উপর ভিত্তি করে চীনা সভ্যতার গল্প বলা এবং বিশ্বের কাছে বিশ্বাসযোগ্য, সুন্দর এবং সম্মানজনক চীনের চিত্র উপস্থাপন করা আমাদের জন্য একটি কঠিন এবং গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের অবশ্যই গভীরভাবে বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও কার্যক্রম চালু করার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চীনের আদান-প্রদান এবং জনগণের বন্ধনকে উন্নত, বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠা এবং ক্রমাগত আন্তর্জাতিক বন্ধুত্বের বৃত্তকে প্রসারিত করতে হবে।
আসলে আমাদের চারপাশের ‘আন্তর্জাতিক সমাজ’ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এ সমাজ আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে বিদেশি বন্ধুরা আমাদের পাশে আছেন এবং ‘আন্তর্জাতিক সমাজ’ আমাদের পাশে বিরাজ করছে। তারা চীনে কর্মরত আছেন এবং লেখাপড়া করছেন। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি, চীন সরকার এবং চীনা জনগণের প্রতি তাদের মতামত ও মূল্যায়ন সব সময়ই আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রভাব ফেলছে। তাদের মুখে বলা কথা চীনকে প্রাণবন্ত এবং বাস্তববাদী করছে এবং তাদের কথায় অনন্য গুরুত্বপূর্ণ শক্তি রয়েছে। বলা যায়, পাশের আন্তর্জাতিক সমাজ হলো চীনা গল্পের অভিজ্ঞতা অর্জনকারী।
নোইয়াং লুওনা টানা ৪১ বছর ধরে চীনে বাস করছেন। তিনি এখন শাংহাই শহরে জীবনযাপন করছেন। তার বাসা হোংছিও রাস্তায় অবস্থিত এবং হোংছিও রাস্তাকে ‘ছোট জাতিসংঘ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ওখানে ৫০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের লোকেরা বাস করছেন এবং সেখানকার চীনের মূল-ভূভাগের বাইরে থেকে আসা লোকদের অনুপাত ৫০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
লুওনা সক্রিয়ভাবে নানা সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করেন এবং চীনের আইন প্রণয়নকারী বিভাগ তার বেশ কয়েকটি প্রস্তাব ও মতামত গ্রহণ এবং আইনে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তার আহ্বানে আশেপাশের আরও বেশি বিদেশি বাসিন্দা কমিউনিটির উন্নয়নে মনোযোগ দিচ্ছেন। তারা বহু বছর ধরে চীনে বাস করেন এবং চীনের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের প্রক্রিয়ার সাক্ষী এবং এতে অংশগ্রহণও করেছেন। তারা ‘চীনা গল্পের’ অংশগ্রহণকারী, শুধু সাক্ষী নন। তাই তাদের বলা চীনা গল্প আরও সত্যিকার এবং মনোমুগ্ধকর হবে।
তা ছাড়া, ‘আশেপাশের আন্তর্জাতিক সমাজ’ হলো চীনা গল্পের শক্তিশালী প্রচারক। সিয়ামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উইলিয়াম এন ব্রাউন বহুবার চীনের অনেক জায়গা ভ্রমণ করেছেন। ‘চীনের ৮০ হাজার কিলোমিটারের যাত্রা’ শিরোনামের বইটিতে ২০ জন পরিশ্রমী চীনা জনগণের গল্প তুলে ধরা হয়।
মার্কিন কৌতুক অভিনেতা জেসি আপেল চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হাস্যরস নিয়ে গবেষণা করতে চীনে এসেছেন এবং ‘চীন-যুক্তরাষ্ট্র কমেডি কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি নিজের চীনে থাকার অভিজ্ঞতা শেয়ার করা ছাড়াও ইউরোপীয় দেশগুলোতে চীনের চায়নিজ শেখার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
তা ছাড়া, রাজ গালোর নামে একজন বিদেশি ইন্টারনেট সেলেব্রিটি দীর্ঘদিন ধরে বেইজিংয়ের রাস্তায় ঘুরে সাধারণ চীনাদের সাক্ষাৎকার নেন।
মার্ক লেভিনে যুক্তরাষ্ট্রের লোকসঙ্গীতের মাধ্যমে চীনা গল্প বলেন। এসব লোক চীনা গল্পের শক্তিশালী প্রচারক।