বিদেশিরা কেন চীনে আসতে চান?
বিদেশিরা কেন চীনে আসতে চান?এ নিয়ে আপনি কখনও কি চিন্তা করেছেন? আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো, কেমন?
তবে, প্রথমে অন্য একটি প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করব। আন্তর্জাতিক সমাজ মানে কি?পণ্ডিতগণের মতে, যখন বেশ কিছু দেশ বুঝতে পারে যে তাদের অভিন্ন স্বার্থ ও মূল্যবোধ আছে, তারা সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চলে এবং একটি সাধারণ ব্যবস্থা গড়ে তোলে, তখন তারা একটি সমাজ গঠন করে। একেই মোটা দাগে ‘আন্তর্জাতিক সমাজ’ বলা হয়।
এর বিপরীতে, সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি তুলনামূলকভাবে সহজ। দেশের বাইরের বিশ্বকে সাধারণত ‘আন্তর্জাতিক সমাজের’ আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। স্পষ্টতই, সাধারণ মানুষের দৃষ্টিতে ‘আন্তর্জাতিক সমাজ’ দেশের বাইরে সীমাবদ্ধ। এটি ‘আমাদের চারপাশে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়’ ধারণাটির তাত্ত্বিক অভিনবত্ব এবং ব্যবহারিক মূল্যকে তুলে ধরে। বিশাল বাহ্যিক বিশ্ব এবং জটিল একাডেমিক ধারণার তুলনায় ‘আমাদের চারপাশে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়’ বলতে সাধারণত ‘আমাদের চারপাশে’ বিদেশি গোষ্ঠীকে বোঝায়। তাদের সঙ্গে আমাদের অফলাইনে সরাসরি যোগাযোগ এবং অনলাইন ‘ভার্চুয়াল যোগাযোগ’ রয়েছে।
এই দৃষ্টিভঙ্গি ‘আন্তর্জাতিক সমাজ’ ধারণাটিকে সহজ করে তোলে। ‘আন্তর্জাতিক সমাজ’ আসলে একটি বিমূর্ত গোষ্ঠী নয়, যার সাধারণ মানুষের সাথে কোনও সম্পর্ক নেই। একে অনেক দূরে বলে মনে হলেও এর বাস্তব অস্তিত্ব রয়েছে।
বৈদেশিক উন্মুক্ততা ও আন্তর্জাতিক আদান-প্রদানের ক্রমাগত সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে ‘আমাদের চারপাশের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়’ অধিক থেকে অধিকতর শক্তিশালী হয়েছে এবং সাধারণ চীনা জনগণের সাথে আরও বেশি সংযোগ স্থাপন করেছে। তারা আমাদের সহকর্মী, প্রতিবেশী, শিক্ষক, ছাত্র ও বন্ধু হতে পারে এবং কেউ কেউ আমাদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কও স্থাপন করেছে এবং পরিবারের সদস্য হয়ে ওঠেছে।
‘ছোট পণ্যের রাজধানী’ অর্থাৎ ই’উকে একটি উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করা যায়। কারণ বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন রঙের, দেশের, জাতির, সংস্কৃতির এবং ধর্মবিশ্বাসের লোকেরা এখানে গাড়ি, বাড়ি কিনতে, বিয়ে করতে, বসতি স্থাপন করতে এবং সন্তান ধারণ করতে এসেছেন। এই বছরের শুরু থেকে ই’উ শহরের বিদেশি বাসিন্দাদের সংখ্যা ১০ হাজারে দাঁড়িয়েছে, যা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের স্তরে ফিরে এসেছে। এই সংখ্যা এখনও বেড়ে চলেছে।
কাসেন হলেন একজন ইয়েমেনি ছাত্র। তিনি বণিকদের একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং ছোটবেলা থেকেই তার পরিবারের সাথে নিজের জন্মস্থান এবং ই’উয়ের মধ্যে যাতায়াত করতেন। এখন তিনি ই’উ শহরে ক্রস-বর্ডার ই-কমার্স অধ্যয়ন করছেন এবং লাইভ সম্প্রচারসহ উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে চীনা পণ্য ও সংস্কৃতি প্রচার করার পরিকল্পনা করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি চীনে বড় হওয়া একজন বিদেশি। আমি চীনের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং কিছু অবদান রাখতে চাই।’ কাসেনের বড় হওয়ার অভিজ্ঞতা এবং আন্তরিক অনুভূতি ‘চারপাশের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের’ অস্তিত্বের জানান দেয়।