চীনের পরিচালক ওয়েন মা ছাই তানের অকাল প্রয়াণ এক অপূরণীয় ক্ষতি
গত ৮ মে বিকেলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, ওয়েন মা ছাই তান এদিন ভোরে মারা যান এবং মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর।
মারা যাওয়ার আগে ওয়েন মা ছাই তান চলচ্চিত্র নির্মাণের সামনের সারিতে সক্রিয় ছিলেন। গত মাসে অনুষ্ঠিত ১৩তম বেইজিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের লাল গালিচায় এবং বেশ কয়েকটি ফোরামে তার ছায়া দেখতে পাওয়া যায়। চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক হিসেবে তিনি তার নতুন মুভি ‘অপরিচিত’ মার্চ মাসের শেষ দিকে সম্পন্ন করেন।‘স্নো লিউপার্ড’ নামে তার পরিচালিত আরেকটি মুভি গত বছর শেষ হয়। এ দুটি মুভি মুক্তি পাওয়ার আগেই আমাদের তাকে বিদায় জানাতে হয়েছে, অনেক দুঃখজনক, তাই না?
একজন তিব্বতি চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে চীনা চলচ্চিত্রাঙ্গনে ওয়েন মা ছাই তানের একটি গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদা রয়েছে। ২০০৫ সালে তার স্ব-রচিত এবং পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দ্যা সাইলেন্ট হলি স্টোনস’ দেখে ওয়েন মা ছাই তানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন বিখ্যাত ইরানি চলচ্চিত্র মাস্টার আব্বাস কিয়ারোস্তামি। চীনের শত বছরের চলচ্চিত্র ইতিহাসে তিব্বতি ভাষার চলচ্চিত্রের পথপ্রদর্শক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় তাকে।
তিনি ছিংহাই প্রদেশের তিব্বতি জাতির স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের একটি ছোট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক স্কুল থেকে তিনি একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। কাজ করার ফাঁকে তিনি উপন্যাস রচনা করতে শুরু করেন। খুব অচিরেই তিনি তিব্বতি জাতি’র সাহিত্য জগতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ২০০২ সালে তিনি বেইজিং ফিল্ম একাডেমিতে ভর্তি হন। বেইজিং ফিল্ম একাডেমি থেকে স্নাতক ডিগ্রি পাওয়ার পর তিনি ‘দ্যা সাইলেন্ট হলি স্টোনস’ নামে ফিচার ফিল্ম তৈরি করেন। এ ফিল্ম তিব্বতি ভাষায় শুটিং হয় এবং এর প্রধান অভিনেতা অভিনেত্রীও তিব্বতি জাতির ছিলেন। তাঁর এই ফিল্ম প্রথমবারের মতো তিব্বত অঞ্চলের বাস্তব দৈনন্দিন জীবনকে মানুষের কাছে উপস্থাপন করেছিল, যা পরবর্তীতে তিব্বতি পরিচালকদের সৃষ্টিকে প্রভাবিত করেছে।