বাংলা

চীনা ওয়াল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার কু ইং

CMGPublished: 2022-07-30 15:23:57
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

হোহশিল-এর বন্য সৌন্দর্য কু ইংয়ের কাছে দুর্দান্ত মনে হয়। কু ইং বলেন যে, যদিও তিনি কয়েক ডজন দেশ এবং চীনের বেশিরভাগ প্রকৃতি সংরক্ষণ এলাকায় গিয়েছেন, এসব জায়গা আকর্ষণীয় হলেও তাকে ধরে রাখতে পারে না। কিন্তু তিনি হোহশিলে আসার পর, আর সেই স্থানটি ছেড়ে যাননি এবং এই জায়গা ভালোবেসে ফেলেছেন। সানচিয়াংইউয়েন অথবা ইয়াংজি নদী, হলুদ নদী ও লানছাং নদীর উত্স এলাকা যেন তার আত্মার পরিচিত স্থান এবং তিনি এখানে তার বাকি জীবন থাকতে চান।

কু ইংয় মনে করেন- অনেক ফটোগ্রাফার আছেন, যারা সানচিয়াংইউয়েন ছবি তোলেন। কিন্তু খুব কম লোকই এখানে ছবি সংগ্রহের জন্য দীর্ঘসময় অবস্থান করেন। তিনি বলেন যে, আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদে এখানে না থাকেন, চিত্রগ্রহণের জন্য প্রচুর সময় ও শক্তি ব্যয় না করেন, আপনি অবশ্যই ভালো ছবি পাবেন না। সানচিয়াংইউয়ানে বন্যপ্রাণীদের চিত্রগ্রহণ করতে চাইলে আপনার প্রকৃত পেশাদার জ্ঞান এবং পেশাদারী মনোভাব প্রয়োজন। আপনি দ্রুত সাফল্যের জন্য তাড়াহুড়া করে ছবি তুললে ভালো কিছু পাবেন না।

২০১৬ সালে কু ইং ১৬তম চীনের পিংইয়াও আন্তর্জাতিক ফটোগ্রাফি প্রদর্শনীর গ্র্যান্ড প্রাইজ অথবা শ্রেষ্ঠ ফটোগ্রাফার পুরস্কার জিতেন। সানচিয়াংইউয়েনের বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত কু ইংয়ের শিল্পকর্মগুলো আরও বেশি সংখ্যক লোকের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং তাদের সমাদর পেয়েছে। নানা সংবাদপত্র এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি ‘বিশ্বের ছাদ’ হিসাবে পরিচিত, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮০০০ মিটার উপরে প্রায় সব চূড়া রয়েছে। এখানে ১০৪৭ প্রজাতির স্থলজ মেরুদণ্ডী প্রাণী রয়েছে, যা চীনের প্রাণীর মোট সংখ্যার ৪৩.৭ শতাংশ। সেগুলোর মধ্যে বিপন্ন এবং হুমকির মুখে ৯৫টি স্থলজ মেরুদণ্ডী প্রাণীর প্রজাতিও রয়েছে।

মালভূমিতে বসবাসকারী বন্য প্রাণীদের অন্যান্য আঞ্চলিক প্রাণীদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা বৈশিষ্ট্য এবং জীবনযাপনের অভ্যাস রয়েছে। কু ইং কাছাকাছি থেকে পর্যবেক্ষণ এবং রেকর্ড করতে পেরে ভীষণ উত্তেজিত ছিলেন। যাইহোক, এই উত্তেজনা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কারণ ‘উচ্চতার অসুস্থতা’ তার ধারণার বাইরে চলে যায়।

‘আমি সেখানে মাত্র এক বা দুই বছর ছিলাম এবং উচ্চতার প্রভাব বেশ গুরুতর ছিল। আমি সেখানে গেলে প্রতিবার বমি করতাম। পর দিন আমি প্রথম দিনে যা খেয়েছিলাম- সবই বের হয়ে যেতো। এরপর, তৃতীয় দিন আমি খালি পেটে থাকতাম। তারপর কেবল চতুর্থ দিনই ধীরে ধীরে খাবার খেতে পারতাম। এই নিয়মটি বের করার পর- যতবার তিনি হোহ শিল-এ যেতেন, ততবার খালি পেটে থাকতেন বা কম খাবার খেতেন। তার জন্য, উচ্চতার অসুস্থতা বা অন্যান্য বাধা, শুটিংয়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।

তিব্বতি হরিণ প্রতি বছর জুন মাসে বাচ্চা দেয়। শুটিং মৌসুমে কু ইং ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণদের জড়ো হওয়ার জায়গায় আগে থেকেই আশেপাশের পরিবেশের সঙ্গে মিলিয়ে একই রঙের তাঁবু স্থাপন করেন।

এ ছাড়া, তিনি খুব বেশি শব্দ করেন না, মন চাইলেই হাঁটাহাঁটি করেন না এবং খুব বেশি গন্ধ হয় এমন খাবার খান না।

রাত না হওয়া পর্যন্ত এবং তিব্বতি হরিণ উপত্যকা ছেড়ে না-যাওয়া পর্যন্ত তিনি তাঁবু থেকে তার বাসায় ফিরেন না। তিনি প্রায় এক মাস এভাবেই জীবন কাটিয়েছেন।

“আপনি যদি এই তিব্বতি হরিণগুলোকে ভালোভাবে ছবি তুলতে চান, তাহলে আপনাকে প্রথমে ভেড়ায় পরিণত হতে হবে।” কু ইং এভাবেই বলেন।

গত ছয় বছর ধরে, কু ইং এই নিয়ম মেনে চলেছেন। এমন কঠোর পরিবেশে শুটিংও তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে, যেমন, নেকড়ের দল তিব্বতি অ্যান্টিলোপকে আক্রমণ করে। আক্রমণটি দ্রুত শেষ হয়। তাই ফটোগ্রাফারের ক্যামেরার লেন্সটিও একটি চটপটে নেকড়ে বা চিতাবাঘের মতো দ্রুত হতে হবে, একটি ক্ষণস্থায়ী মুহূর্তে এটি ক্যাপচার করতে হবে। সবচে মূল্যবান মুহূর্তটি যদি মিস করেন, তাহলে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হবে।

首页上一页123 3

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn