ব্রাজিলের বিখ্যাত কার্টুনিস্ট মাউরিসিও আরাউজোদে সুলা
বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস শেষ হয়েছে। তবে গেমসে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ব্রাজিল অলিম্পিক কমিটির তৈরি পোস্টার এখনও ইন্টারনেটে দেখা যায়। এই পোস্টারে ব্রাজিলের সুপরিচিত কার্টুন চরিত্র ‘মনিকা’ স্পোর্টস স্যুট পরেন এবং তার প্রিয় নীল স্টাফ খেলনা খরগোশ ধরে রাখেন। এটিই হলো ব্রাজিলের বিখ্যাত কার্টুনিস্ট মাউরিসিও আরাউজোদে সুলার সর্বশেষ সৃজনশীলতা। ৮৭ বছর বয়সী মাউরিসিও আরাউজোদে সুলা নিজের কাজ বন্ধ করেন নি। তার একটি বড় স্বপ্ন হলো চীনে তার সিরিজ কৌতুকের বই প্রকাশ করা।
মাউরিসিও আরাউজোদে সুলা ১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। প্রায় ৬০ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি দু’শতাধিক কার্টুন চরিত্র সৃষ্টি করেছেন। তার মধ্যে ‘মোনিকা ও তার অংশীদার’ নামে সিরিজ বই ৪০টি ভাষায় অনুদিত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত হয়েছে। যার মোট পরিমাণ একশ কোটির বেশি। ব্রাজিলে মোনিকা কয়েক প্রজন্মের মানুষের ওপর প্রভাব ফেলেছে এবং প্রায়ই সবাই ব্রাজিলিয়ান শিশু ‘মোনিকার’ ভক্ত। ২০০৭ সালে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ প্রথমবারের মতো মনিকার এই কাল্পনিক চরিত্রকে তার প্রতীকী দূত হিসেবে নিয়োগ করে।
নিজের কার্টুনিস্ট পেশা প্রসঙ্গে মাউরিসিও সুলা বলেন, ৪ বছর বয়সে তিনি রাস্তার পাশে প্রথম কমিক বই কুড়িয়ে পান। সেই কমিক বই পড়তে তাঁর খুব ভালো লাগে। কমিক বই পড়ার মাধ্যমে তিনি কেবল নিরক্ষরতা মুক্তই হন নি, বরং জীবন ও মূল্যবোধের প্রতি একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিও লাভ করেন। তাই বড় হওয়ার পর তিনি ছবি আঁকাকে নিজের পেশা হিসেবে বাছাই করেন। কার্টুনের মাধ্যমে আরো বেশি মানুষের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলা যায় বলেও তিনি মনে করেন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ার প্রসঙ্গে মাউরিসিও সুলা বলেন, তার কার্টুন শিল্পকর্ম লাখ লাখ শিশু দেখছে এবং তাদের সুষ্ঠুভাবে বড় হতে দেখে তিনি খুব গর্বিত। তিনি বলেন, আমি যে কাজটি করি তার সবচে গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি। আমি লাখ লাখ ব্রাজিলিয়ান শিশুদের তাদের জীবনে প্রথমবার পড়তে এবং সাক্ষর করতে সাহায্য করেছি, ফলে তারা পড়তে ভালোবাসে এবং পড়ার একটি ভাল অভ্যাস গড়ে তুলেছে।