পরিচালক চাং ই মৌ
অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিমূলক কাজ করার সময় চাং আরো কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছেন।
‘চাং ই মৌ-র ২০০৮’ শিরোনামে এক তথ্যচিত্রে তিনি এমন একটি কথা বলেছিলেন যে, ‘পরিচালক হিসেবে সারা জীবনে আমি অনেক চলচ্চিত্র শুটিং করতে পারি, তবে সারা জীবনে অলিম্পিক অনুষ্ঠান পরিচালনার সুযোগ হয়তো মাত্র একবার।’
তিনি বলেন, চলচ্চিত্রের চেয়ে অলিম্পিক একটু ভিন্ন রকম এবং ১৪০ কোটি চীনা মানুষের চাহিদা পূরণ করা উচিত্।
দুই বছরব্যাপী প্রস্তুতির সময়ে তিনি ও তার দল হাজার বার বড় ও ছোট সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন।
২০০৮ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে একটি উদাহরণ হিসেবে নিয়ে বলা যায়, সর্বপ্রথমে অনেকে ড্রামা ব্যবহার করার প্রস্তাব করেন। তবে, তিনি রাজি ছিলেন না। তিনি মনে করেন, ড্রামা ব্যবহার করার মধ্যে আসলে নতুন কিছু নেই। ২০০৮ সালের অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাগজ নিয়ে সৃজনশীল প্রস্তাবের দৃঢ় বিরোধিতা করেন অনেকে। কারণ, প্রযুক্তি ও খরচসহ অনেক বিষয়ে বিবেচনা করায় তা বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। তবে চাং ই মৌ কাগজ ব্যবহারের বিষয়ে জিদ ধরে থাকেন। তার এই চেষ্টার কারণে চীন বিশ্বকে সেই আশ্চর্যজনক ছবি দেখাতে পেরেছিল।
২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক গেমস চলাকালে চাং ই মৌ একই রকম মানসিকতা বজায় রাখেন। তবে ২০০৮ সালের চেয়ে একটু ভিন্ন বিষয় হলো তার মুখে এবার আমরা ক্লান্তি দেখতে পেয়েছি। তিনি এখন ৭১ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধ এখন।
যারা চাং ই মৌ’র সঙ্গে সহযোগিতা করেন, তারা এ তিনটি শব্দ দিয়ে তাকে বর্ণনা করেন, এ তিনটি শব্দ হলো; আরও তীক্ষ্ণ, আরও দায়িত্বশীল, আরও কঠোর পরিশ্রম।
শীতকালীন অলিম্পিক গেমস সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। অনেকে বলেন, এবার চাং ভালোভাবে বিশ্রাম নিতে পারবেন। আসলে তা নয়, আগামীকাল প্যারালিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে। এবারের পরিচালকও তিনি। তিনি বিশ্রাম নিতে পারেন না এবং তিনি বিশ্রাম নিতে চান না। যতক্ষণ পর্যন্ত তার শক্তি আছে, তিনি অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করবেন।
তার সবচেয়ে প্রিয় চলচ্চিত্র মানুষ, অর্থাত্ জাপানের বিখ্যাত পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক আকিরা কুরোসাওয়া এমন একটি কথা বলেছিলেন যে, আমার জীবন বিয়োগ সিনেমা, সম্ভবত শূন্য হয়ে যাবে। এই বাক্যটি চাং ই মৌ’র ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যদিও নিষ্ঠুর শোনাচ্ছে, তারপরও সম্ভবত এই জীবনের জন্য তিনি আকাঙ্ক্ষিত। তার কাছে চলচ্চিত্রের জন্য কষ্টও এক ধরনের সুখ ও আনন্দ।