চীনের মুসলিম জাতি কাজাখ-China Radio International
সিনচিয়াংয়ের পার্বত্য অঞ্চল থিয়েনশান, আলথাই, থারপাগহাথাই পর্বতমালার চারপাশেই তাদের বসবাস। কাজাখদের মধ্যে শিকার ও পশুপালন হাজার বছরের সংস্কৃতি। তবে এদের একটি অংশ কৃষিকাজও করে।
অবশ্য আজকাল শিক্ষা বিস্তারের ফলে কাজাখরা অনেকেই শহরে বসবাস করেন, আধুনিক পেশা বেছে নিয়েছেন এবং আধুনিক বাড়িঘরে থাকেন, বড় চাকরি করেন।
কাজাখরা মুসলিম। তাই তারা নামাজ, রোজা পালন করেন অন্য মুসলিমদের মতো। তাদের বড় উৎসব ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। পাশাপাশি তারা নিজস্ব কিছু সাংস্কৃতিক রীতিনীতি মেনে চলেন। তাদের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব হলো নওরোজ। এটি সাধারণত মার্চের ২২ তারিখের কাছাকাছি অনুষ্ঠিত হয়। নওরোজ হলো কাজাখ পঞ্জিকা অনুযায় নববর্ষ। কাজাখ ভাষার সঙ্গে তুর্কি ও উইগুর ভাষার বেশ মিল আছে।
কাজাখরা পশুর মাংস ও দুগ্ধজাত খাদ্য খেয়ে থাকে। গরু, ভেড়া ইত্যাদির মাংস তাদের প্রিয়। পনীর, মাখন, ঘোলজাতীয় পানীয়, মাংসের পুর দেয়া পিঠা, ভেড়ার রোস্ট ইত্যাদি তাদের খুব প্রিয়। তবে তারা মুসলিম বলে শুয়োর, গাধা খায় না। রক্তপানও করে না। এবং ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী হারাম-হালালের বিধিনিষেধ মেনে চলে। তারা অতিথি আপ্যায়ন করতে খুব পছন্দ করে। অতিথির সামনে রোস্ট করা ভেড়ার মাথা এবং ভালো মাংস পরিবেশন করে। ঘোটকীর দুধ দিয়ে তারা একধরনের ননীজাতীয় খাদ্য তৈরি করে। তারা দুধ চা পান করতেও ভালোবাসে। ময়দা দিয়ে তারা প্যানকেক, হটকেক, পেস্ট্রি, রুটি ইত্যাদি তৈরি করে। তারা ভাতও খায়। তারা খাওয়ার আগে ও পরে মোনাজাত করে।
কাজাখরা গানবাজনা খুব পছন্দ করে। তাদের অনেক লোকগাঁথা রয়েছে যা তারা সুর করে গায়। বিশেষ ধরনের বাদ্যযন্ত্রে সুর তুলে তারা লোককাহিনী গায়।
কাজাখরা উৎসবে অনুষ্ঠানে সিল্কের পোশাক খুব ভালোবাসে। কাজাখ পুরুষরা সাদা সিল্ক বা সাটিনের লম্বা শার্ট (কুর্তা ধরনের) পরে। কুর্তার কলার ও হাতায় নকশা করা থাকে। এর উপরে কালো কোটি পরে। ভেলভেটের তৈরি ওভারকোট পরে। কুচি দেয়া সালোয়ার বা ট্রাউজার এবং সঙ্গে থাকে উচুঁ বুট জুতা। তাদের টুপি তৈরি হয় পশুর চামড়া থেকে।