শি পো এবং সম্প্রীতি ও সহযোগিতা
শি পো বিশ্বাস করেন যে, সম্প্রীতি হল একটি সহনশীল অবস্থা। শেষ পর্যন্ত সমস্ত ভিন্ন জিনিসের সহাবস্থান দরকার। শুধুমাত্র একটি শব্দ শোনা অর্থহীন, শুধুমাত্র একটি রঙ যথেষ্ট নয় এবং শুধুমাত্র একটি স্বাদ গ্রহণ করলে তাকে সুস্বাদু বলা যায় না। কারণ, শুধুমাত্র একটি জিনিস থাকলে তাকে অন্যকিছুর সাথে তুলনা করা যায় না। তাই সম্প্রীতি প্রথমে বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্ব করে। শি পো পূর্ববর্তী রাজাদের উদাহরণ টেনে বলেন, পূর্ববর্তী রাজারা প্রথমে বিদেশী নারীদের রাণী হিসেবে বিয়ে করতেন, তারপর সারা বিশ্ব থেকে ধন-সম্পদ সংগ্রহ করতেন। যারা সরাসরি ভালো ও সঠিক পরামর্শ দিতে পারেন, তাদের সরকারি কর্মকর্তা বানাতেন।
তখনকার রাজারা ভিন্নতার মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা করতেন, তাই দেশ সুশাসিত ছিল এবং রাজা নিজেই শান্তিতে তার সিংহাসন ভোগ করতে পারতেন। কিন্তু চৌ ইয়ৌ রাজা সম্প্রীতির নিয়ম পরিত্যাগ করে সব জিনিস একই রকমের বানাতে চেয়েছিলেন। তাই, শি পো জোর দিয়ে বলেন, চৌ রাজবংশ তিন বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যাবে। বাস্তবতা প্রমাণ করেছে যেম শি পো একজন মহান রাজনৈতিক ভবিষ্যদ্বক্তা ছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ৭৭১ সালে, চৌ ইয়ৌ রাজা নিহত হন, পশ্চিম চৌ রাজবংশের অবসান ঘটে।
আন্তর্জাতিক আদান-প্রদানে, চীন অন্যান্য দেশের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সম্প্রীতিময় সম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে। তার পাশাপাশি নিজস্ব স্বাধীনতার উপর জোর দেয় এবং অন্যান্য দেশের সাথে অন্ধভাবে একমত হয় না। শি পো-র "সম্প্রীতি" তত্ত্বের "সম্প্রীতি অথবা অভিন্নতা" নিয়ে তর্ক-বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। কনফুসিয়াস বলেছেন, “শিষ্টাচারের ব্যবহারের সময়, সম্প্রীতি সবচেয়ে মূল্যবান। প্রাচীন রাজারা এ নিয়ম অনুসরণ করতেন, এটাই সবচেয়ে সুন্দর।" এখানে "সম্প্রীতি"-এর মধ্যে “বৈচিত্র্য” ইতোমধ্যে অন্তর্নিহিত করা হয়েছে। তার লক্ষ্য হল ভিন্নতা পাশে রেখে অভিন্নতা অনুসন্ধান করা, পার্থক্যকে সম্মান করা এবং সুরেলা সহাবস্থান বাস্তবায়নের নীতি ও নিয়ম মেনে চলা। তা হল অনেক কিছুর সুশৃঙ্খল বিকাশের সংমিশ্রণ।