প্রাচীনকালে চীনারা কিভাবে কাবাব খেতো? জাদুঘর গেলে জানা যাবে বিস্তারিত
সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যময় একটি খোদাই পাথরের ছবি পূর্ব হান রাজবংশ আমলে তথা ২২০০ বছর আগে তৈরি। এ ছবির উচ্চতা ৭৮ সেন্টিমিটার, বিস্তার ৭০ সেন্টিমিটার। পাথরের ছবিতে বারবিকিউ রান্নার দৃশ্য তুলে ধরে কয়েক জন ব্যক্তির আকার খোদাই করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের হাতে লম্বা ছুরি ও কর্তিত মাংসের টুকরা, একজনের হাতে পাখা, যা দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে কাবাব রোস্ট করার জন্য। পাশে কিছু মাংস ও বেঁধে রাখা ছাগলও দেখা যাচ্ছে। এ ছবি থেকে বোঝা যায়, ২২০০ বছর আগে চীনারা খাঁসির মাংসের রোস্ট পছন্দ করতেন। তত্কালীন চীনাদের মাংস টুকরো করে কেটে কাবাব তৈরি ও তা খাওয়ার পদ্ধতি আধুনিক চীনাদের মতোই।
যদিও রান্নার পদ্ধতিতে অনেক মিল রয়েছে, তবে হান রাজবংশ আমলের কাবাবের স্বাদ আধুনিক যুগের স্বাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। এ সম্পর্কে ছেন চাও বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্য ও শাস্ত্র থেকে জানা গেছে, পূর্ব হাং রাজবংশ আমলের মশলার ধরন ছিল খুবই কম। তখন জিরা ও মরিচসহ বিভিন্ন সুগন্ধী মশলার প্রচলন ছিল না। তাই প্রাচীনকালের লোকেরা মাংস খেতেন শুধু পানিতে সিদ্ধ করে। বারবিকিউর ক্ষেত্রেও কিছু সসের সাথে মিশিয়েই তাদের মাংস খেতে হতো। স্যুচৌতে প্রত্নতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা কিমা সসসহ বিভিন্ন সসও অনুসন্ধান করেছিলেন। বর্তমানে যখন আমরা কাবাব খাই, তখন অবশ্যই জিরাসহ বিভিন্ন মশলা দেই। যদি হান রাজবংশ আমলের কাবাবের স্বাদ সম্পর্কে জানতে চাই, তাহলে বিনা মশলায় খেতে হবে কাবাব।
বস্তুত, স্যুচৌ চীনাদের বারবিকিউ’র উত্সস্থান নয়। তবে এখানকার জাদুঘরে প্রাচীনকালের চীনাদের বারবিকিউ রান্নার পদ্ধতি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আগুন দিয়ে খাবার রোস্ট করা প্রাচীনকালে মানবজাতির খাবার রান্নার একটি পদ্ধতি, যা মানুষ ও পশুর খাবার খাওয়ার পদ্ধতিতে পার্থক্য এনে দিয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানিয়েছেন যে, ৬ লাখ বছর আগে প্যালিওলিথিক যুগের পুরাকীর্তিতে অনেক পশুর হাড় আগুনে জ্বালানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। আর ৭০০০ বছর আগে চীনের চেচিয়াং প্রদেশের চিয়াসিং শহরের একটি সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তিতে কাদামাটি দিয়ে তৈরি লম্বা আকারের গ্রিল শেল্ফ আবিষ্কার করা হয়েছে, যেটি আধুনিক যুগের গ্রিলের মতো সরঞ্জাম।