অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রসঙ্গে
৩৩ বছর বয়সের চৌ পো গান গাইতে বেশ পছন্দ করেন। তিনি মনে করেন, সংগীতের কারণে তিনি সাধারণ জীবনের আনন্দ উপভোগ করছেন। তাঁর আন্তরিক ও আত্মবিশ্বাসী চরিত্র দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তিনি একজন অটিজমে আক্রান্ত রোগী। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি নানার কাছে বেশ কৃতজ্ঞ। কারণ, যখন আমি অটিজমের রোগী হিসেবে সনাক্ত হই, তখন তিনি আমার যত্ন নিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।’ ১৯৯৮ সালে ৮ বছর বয়সের ছেলে চৌ পো-কে অটিজমের রোগী হিসেবে সনাক্ত করা হয়। তখন তাঁর বাবা-মা চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। ফলে, নানা তাঁকে দেখাশোনার দায়িত্ব বহন করেন।
নানার সাথে পাহাড়ে আরোহন করা, বাজারে শাকসবজি কেনা, এবং রান্নাবান্না শেখে চৌ পো। নানা কখনো তাকে একজন রোগী হিসেবে দেখেননি। ধীরে ধীরে নানার যত্নে চৌ পো বড় হয়। নানার ৮০তম জন্মদিনে সে টানা দুটি গান গেয়ে শোনায়। তখন পরিবারের সদস্যরা মনে করেন, এ বাচ্চা সংগীতের খাতে তার বিশেষ দক্ষতাও রয়েছে। তখন থেকে ছেলে চৌ পো গানের বিশেষ ক্লাসে যেতে শুরু করে। নানার সাথে নিয়মিত সে বিভিন্ন কনসার্ট শুনতেও যায়।
এ সম্পর্কে তাঁর সংগীতের শিক্ষক বলেন, ছেলে চৌ পো যখন গান গায়, তখন সাধারণ বাচ্চাদের থেকে তাকে আলাদা করা মুশকিল। সে সংগীত থেকে আনন্দ পায়। ২০২২ সালে চৌ পো একজন গায়ক হিসেবে সংগীতের মঞ্চে দাঁড়ায়। তাঁর অভিজ্ঞতা স্মরণ করে চৌ পো বলেন, “আমার নানার কারণে সাধারণ মানুষের মতো জীবন কাটাচ্ছি আমি। সংগীত শেখার কারণে আমার জীবন আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে।”
গান গাওয়া ছাড়া, ছেলে চৌ পো পিয়ানো বাজানো, ক্যালিগ্রাফি লেখা, বাস্কেটবল খেলা, সাঁতার কাটা শিখেছে। বলা যায়, সাধারণ মানুষের সাথে তার বেশি পার্থক্য নেই। বর্তমানে তাঁর জন্য অটিজম একটি ভয়াবহ রোগ নয়। কারণ, তাঁর পরিবারের সদস্যরা কখনো তাঁকে ত্যাগ করেনি, বরং ভালোবাসার সাথে তাঁর যত্ন নিয়েছে।