চীনের পাহাড়াঞ্চলের সিনিয়র সংগীত শিক্ষক তেং সিয়াও লানের গল্প
১৯ মার্চ বিকেলে ৭৯ বছর বয়সী ম্যাডাম তেং সিয়াও লান চীনের হ্যপেই প্রদেশের ফুপিং জেলার মালান গ্রামে সংগীত উত্সবের প্রস্তুতিকাজের সময় সেরিব্রাল ইনফ্রাকশনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২১ মার্চ রাতে দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নেন। আজকের অনুষ্ঠানে ম্যাডাম তেং সিয়াও লানের গল্প তুলে ধরবো।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসের শেষ দিকে বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শিশু-গায়কদের সাক্ষাত্কার নেওয়ার জন্য সংবাদদাতা হ্যপেই প্রদেশের ফুপিং জেলার মালান গ্রামে যান। সেই সময় ক্লাসের সংগীত শিক্ষক তেং সিয়াও লানের সাথেও পরিচয় হয় তার। তিনি সারা জীবন পাহাড়াঞ্চলের বাচ্চাদের সংগীত শিখিয়ে এসেছেন।
১৯৪৩ সালে, তখনও গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত হয়নি, সেই যুদ্ধের সময়ে তেং সিয়াও লানের জন্ম। তাঁর বাবা ‘চিনছাজি দৈনিক পত্রিকা’-র সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ পত্রিকা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সংশ্লিষ্ট খবর ও প্রতিবেদন প্রকাশ করতো। তাই জাপানি আগ্রাসকদের গ্রেফতার ও তদন্ত এড়াতে তিনি গোপনে পত্রিকার কাজ করতেন। সেই সময়ের কথা স্মরণ করে ম্যাডাম তেং চোখের পানি ফেলেন। তিনি বলেন, একবার জাপানি বাহিনী তার বাবার গোপন আস্তানার কাছাকাছি চলে আসে। তখন স্থানীয় গ্রামবাসীরা বাবাকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করেন ও ১৯ জন প্রাণ হারান। সেই সময় ম্যাডাম তেং জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা জাপানি সৈন্যদের গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে যান এবং পালিয়ে যাওয়ার রাস্তায় পাহাড়াঞ্চলের একটি জরাজীর্ণ ঘাসের চালায় তেং সিয়াও লান জন্মগ্রহণ করেন।
অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও বাবা-মায়ের বিপ্লবী কাজের বিপদের কারণে যখন পত্রিকার অফিস আবার হস্তান্তর করতে হয়, তখন বাচ্চা তেং সিয়াও লান ফুপিংয়ের একটি গ্রামের পরিবারের সাময়িক সদস্য হয়ে যান। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর তিনি আপন বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসেন। তাই ফুপিং তেংয়ের জন্য দ্বিতীয় জন্মস্থানের মতো।