ফিরে যাবার পথ
পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, গত ২৬ জানুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চীনা নাগরিকরা ৩৫০ কোটি বারের মতো ভ্রমণ করেছে। এই যাত্রীপ্রবাহে আমরা দেখেছি দ্রততর পরিবহনযান এবং বৈশিষ্ট্যময় ভ্রমণের পদ্ধতি। আমরা এখন দ্রুত ও সহজে গন্তব্যে পৌঁছতে পারি। তবে একই সময়ে ধীরে ধীরে যাবার ট্রেনও রয়েছে। ধীরযাত্রা হলেও ভ্রমণের মজা পাওয়া যায়।
চীনের বসন্ত উত্সবের সময়ে, আন হুই প্রদেশের রাজধানী হ্য ফেই ট্রেন স্টেশনে থামে চার গ্রিন কোচের একটি ট্রেন।৮৫২৫ নম্বরের এ ট্রেনটি এখন ইয়াংসি নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে চলাচলকারী একমাত্র ট্রেন, যেটায় এসি ব্যবস্থা নেই। হ্য ফেই থেকে উহু পর্যন্ত এ ট্রেনের রুটে রয়েছে ৩টি স্টপ। পুরো যাত্রাটি ৩ ঘন্টা ৪৩ মিনিটের এবং ঘন্টায় এ ট্রেনের গড় গতি ৬০ কিলোমিটার। দ্রুততর বুলেট ট্রেনে একই দূরত্বে যেতে লাগে মাত্র ৩৭ মিনিট।
এ ট্রেনের আসনগুলোর মধ্যে স্পেস কম। জানালাও খোলা যায়, যদিও বুলেট ট্রেনের জানালা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। এ ট্রেন পুরান বয়লারে গরম পানি সরবরাহ করে। পুরান সময়ের এ ট্রেন পঞ্চম বারের মতো বসন্ত উত্সবের পরিবহনে অংশ নেয় আর এখনও প্রতিদিন তার অর্ধেক টিকিট বিক্রি হয়।
বুলেট ট্রেন থাকলেও অনেকে এই স্বল্পগতিরি ট্রেন বেছে নেয় কারণ এ ট্রেনে টিকিটের দাম কম। পুরো পথ যেতে মাত্র সাড়ে ২২ ইউয়ান লাগে আর মাঝের দু স্টেশনে যেতে সর্বনিম্ন ৫ ইউয়ান লাগে। অন্যদিকে চীনের অনেক প্রবীণ ব্যক্তি মোবাইল ফোন দিয়ে টিকিট কিনতে পারেন না। তাই তারা এ স্লো ট্রেন পছন্দ করেন। এ ট্রেনে সাধারণত অনেক আসন খালি থাকে। তাই স্টেশনে আসার পরও টিকিট পাওয়া যায়। তাছাড়া, স্লো ট্রেনের অভিজ্ঞতা লাভ করতে অনেক ভ্রমণকারী এ ট্রেনে চড়তে চান। ইনার-মঙ্গোলিয়ার বাসিন্দা লুই সিউ মেই এবার স্বামীর বাসায় বসন্ত উত্সব উদযাপন করতে আসেন। স্বামী ও বাচ্চার সঙ্গে তিনি এ স্লো ট্রেনে চড়েন। সঙ্গে নিয়ে আসেন তাজা খাশির মাংস। তিনি জানান, তাদের তাড়াতাড়ি ফিরে যাবার দরকার নেই এবং বাচ্চাকে পুরাতন এ ট্রেন দেখাতে চান। তাই তারা এ ট্রেনে চড়েছেন।