পশ্চিম মুখে আমার যাত্রা-পূর্ব ৩
এ দিনের কাজ মোটামুটি শেষ করে হোটেলে ফিরি। পরবর্তী দিন আমার একটি ভিডিও শুটিং আছে তাই আমি তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাই। পরদিন আমরা খ্য চিয়া নামে একটি মন্দিরে শুটিং করতে যাই। এ মন্দির আমাদের হোটেল থেকে বেশি দূর নয়; গাড়িতে যেতে ১ ঘন্টার মতো লাগে। এখানে আমরা পুলান পোশাক এবং সুয়ান নামে একটি স্থানীয় নৃত্য নিয়ে একটি ভিডিং শুটিং করবো।
‘শুয়ান’ প্রাচীন শাংশুং রাজবংশ আমলে প্রচলিত হওয়া এক ধরনের নৃত্য। এটি এনগারি এলাকার শাংশুং রাজবংশের সবচেয়ে সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প। এটি শাংশুং থেকে গুজ রাজবংশ পর্যন্ত হাজার হাজার বছর ধরে চলে এসেছে। ‘শুয়ান’ নৃত্য হলো কথা বলা, গান গাওয়া ও নাচের সংমিশ্রণ। পোশাকগুলো চমত্কার ও জমকালো, গানগুলো সুরেলা এবং নাচের ভঙ্গি আভিজাত্যপূর্ণ। নৃত্যের ধরনটি তিব্বতি নৃত্যের দ্রুত ছন্দ থেকেও আলাদা। এতে মধ্য ও দূরবর্তী তিব্বতের লোকনাচের সবচেয়ে সুন্দর অংশের মিশ্রণ রয়েছে। এটি তিব্বতি জনগণের সমৃদ্ধি ও সুন্দর পোশাক প্রদর্শনের একটি চমত্কার উপায়।
তিব্বতের পুলানের বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে একটি ঐতিহ্যবাহী নৃত্যের চর্চা হয় - ঐতিহ্যবাহী শুয়ান নৃত্য। এর রয়েছে গভীর সাংস্কৃতিক অর্থ।
পুলানের শুয়ান নাচ এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের একটি অনন্য নৃত্য। তাঁরা চিত্তাকর্ষক ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে এবং সুন্দর সঙ্গীতের তালে নাচে। তখন তাদের ভীষণ সুন্দর লাগে।
শুয়ান নাচের ভঙ্গি চমত্কার; নৃত্যশিল্পীদের অঙ্গভঙ্গি ও পদক্ষেপে দারুণ সমন্বয় থাকে। নাচের মাধ্যমে তাঁরা তুলে ধরেন হরিণ, উড়ন্ত ঈগল তথা প্রকৃতির জীবনীশক্তি ও সৌন্দর্যকে।
পুলান শুয়ান নৃত্য শুধু এক ধরনের বিনোদনই নয়; এক ধরনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও বটে। শুয়ান নাচ প্রকৃতির প্রতি পুলানবাসীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের নিদর্শন। তাদের জীবন, তাদের ভালোবাসা ও অনুভূতি ফুটে ওঠে এই নাচে।