পশ্চিম মুখে আমার যাত্রা-পূর্ব ৩
প্রিয় বন্ধুরা, গত সপ্তাহের অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম, দুদিনের কাজ শেষ করে আমরা তৃতীয় জেলার উদ্দেশ্যে রওনা হই। এবার আমাদের গন্তব্য পুলান জেলা।
আজকের অনুষ্ঠানে আমরা পুলান জেলায় আমাদের ভ্রমণ সম্পর্কে জানাবো আপনাদেরকে।
জান্দা জেলা ও পুলান জেলার মধ্যে দূরত্ব ৩৩০ কিলোমিটার। সেখানে যেতে এক দিন সময় লাগে। কোলাহল থেকে দূরে একটি মনোরম ভূমি এই গ্যাং রিনপোচে, ভারতবর্ষে যা ‘কৈলাস পর্বত’ নামে পরিচিত। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ পবিত্র পর্বত এবং পৃথিবীর ‘তৃতীয় মেরু’। অতীতে এখানকার প্রাচীন মন্দির ও প্রাচীরচিত্রগুলো প্রত্যেক বিশ্বাসীর কাছে পবিত্র ছিল।
এই ভূমিতে আমরা স্থানীয় বাসিন্দাদের আতিথেয়তা উপভোগ করি, চা খাওয়া এবং তাদের সঙ্গে আড্ডার মধ্য দিয়ে। তারা সহজ ভঙ্গিতে নিজেদের জীবনের আকাঙ্ক্ষার কথা বলে যান।
পায়ে হেঁটে তীর্থযাত্রা ইতিহাসের দীর্ঘতম নদীতে হাঁটার মতো। ধাপে ধাপে আরোহণ, প্রতিটি পদক্ষেপ বাস্তব ও ধর্মীয় ভাবে পূর্ণ।
দূর থেকে গ্যাং রিনপোচের চূড়ার দিকে তাকালে মনে হয় স্বর্গের দরজা একটু একটু করে কাছে আসছে। সেই মুহূর্তে, হৃদয়ে আনন্দ ও মুগ্ধতার মিশেলে এক অবিস্মরণীয় আবেগের সৃষ্টি হয়।
আমি কোনও ধর্মে বিশ্বাসী নই। তবে তিব্বতে সবসময় ঐকান্তিক বিশ্বাসী দেখতে পাই। বিশেষ করে গ্যাং রেনপোচে কেউ কেউ চীন কিংবা বিশ্বের অন্যান্য প্রান্ত থেকে এখানে এসে হাঁটু গেড়ে উপাসনা করেন। অনেকে পরিবার নিয়ে আসেন, প্রবীণ থেকে ছোট বাচ্চা পর্যন্ত তারা গ্যাং রেনপোচে কেন্দ্র করে ৫৬ কিলোমিটার পথে হাঁটাহাঁটি করেন। এটিকে বলা হয় ‘ছুয়ান শান’, মানে পবিত্র পাহাড়কে কেন্দ্র করে ঘোরা। তাদের বিশ্বাস, একবার ঘুরলে অসুস্থতা দূর হবে আর বারবার ঘুরলে বুদ্ধের আরও কাছাকাছি যাওয়া যাবে।